বাংলা সাহিত্যে রহস্য-রােমাঞ্চ-গােয়েন্দা কাহিনির শুরু হয়েছিল প্রিয়নাথ মুখােপাধ্যায়ের দারােগার দপ্তর দিয়ে। এক-একটি বাস্তব রহস্যের পুলিশি তদন্তের ধারাবিবরণী ছিল সেই রহস্য কাহিনি। এরপর দারােগাদের অভিজ্ঞতা লেখার একটা চল শুরু হয়। কিন্তু সবই ছিল ‘কেস হিস্ট্রি’—সাহিত্যরসে সমৃদ্ধ গল্প বা উপন্যাস তাকে বলা যায় না। রহস্যগােয়েন্দা কাহিনি উপন্যাসের আদলে সাহিত্যের আঙিনায় প্রথম নিয়ে আসেন পাঁচকড়ি দে। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘নীলবসনা সুন্দরী’, ‘মায়াবী’, ‘হত্যাকারী কে?’ইত্যাদি। পাঁচকড়ি দে’র জনপ্রিয়তা সেসময়ে ছিল ঈর্ষণীয়। সেই ঐতিহ্যের কথা মনে রেখে ১৯৩২ সালে শুরু হয়েছিল রহস্য-রােমাঞ্চ কাহিনির প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘রােমাঞ্চ’ তারপর একে-একে আবির্ভূত হয়েছিল ‘তদন্ত’, ‘মাসিক রহস্য পত্রিকা’, ‘মাসিক গােয়েন্দা’, ‘ক্রাইম’, ‘অপরাধ’ ইত্যাদি পত্র-পত্রিকা। একসময়ে এ জাতীয় পত্রপত্রিকার জনপ্রিয়তা পৌঁছে গিয়েছিল তুঙ্গে। অথচ আশির দশকের শেষে একে-একে এই পত্রিকাগুলাে তাদের ‘শেষ সংখ্যা’ প্রকাশ করে। রহস্য-রােমাঞ্চ সাহিত্যের একটা অধ্যায়ে যবনিকা নেমে আসে। সেইসব লুপ্ত পত্রিকা থেকে প্রত্নবস্তুর মতাে একশােটি গল্প উদ্ধার করেছেন অনীশ দেব। কত না নামী-দামি লেখক মণিমাণিক্যের মতাে এক-একটি গল্প। লিখেছিলেন সেইসব পত্রিকায়! রহস্য সাহিত্যের খনি ঘেঁটে একশােটি মণিরত্ন উপহার দেওয়া হল দু-মলাটে।