বঙ্গবন্ধু মুজিব ছিলেন মহাকায়, সৃষ্টিশীল ও কল্যাণ প্রত্যাশী মানুষ। সাধারণ বাঙালি থেকে তাঁর উচ্চতা ছিল অনেক বেশী। সব দিক বিবেচনায় সহজেই চোখে পড়তেন তিনি। তাঁর ব্যাক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানবিক গুণাবলী ও শিষ্টাচার, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য ভালবাসার টান সব মিলিয়ে তিনি পৃথিবীর যে কোন জাতীয় নেতার তুলনায় ছিলেন অন্যতম গুণে গুণান্বিত। সে কারণে তাঁর সমকালীন রাজনৈতিক সকল ব্যাক্তিত্বকে পাশে রেখে হয়ে উঠেছিলেন একক নেতা। বাঙলা ও বাঙালির স্বাধীনতার প্রতীক।
তিনি নিজেকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতেন তাদের কল্যাণের জন্য। তিনি দেশ ও জনগণের মুক্তির জন্য জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন জেলে বন্দি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে যেদিন দেশে ফিরে আসেন, বিমান থেকে নেমে সর্ব প্রথমে তিনি যান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লক্ষ কোটি জনতার কাছে। সেখানে তিনি যে ভাষণটি দিয়েছিলেন তাতে তিনি এক জায়গায় বলেন ‘‘আমায় আপনারা পেয়েছেন, আমি আসছি। জানতাম না, আমার ফাসির হুকুম হয়ে গেছে আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি আমি মানুষ, আমি মুসলমান একবার মরে ২ বার মরে না। আমি বলেছিলাম আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো, আমার বাঙালি জাতিকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।
বিশ্ব দরবারে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়ে আছেন।
দেশের মাটিতে নেমে তিনি তো বসে থাকেননি এক মূহুর্ত। শুরু করে দিলেন আরেক যুদ্ধ। দেশ গড়ার যুদ্ধ। মাঠে ময়দানে বিদেশ বিভুয়ে, কত কাজ। ঘুমানোর সময় ছিল না তাঁর। শুধুই চিন্তা, তাঁর দেশের মানুষ কি করে সুখে থাকবে।