প্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য ‍প্রসঙ্গ (পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের বই)

৳ 100.00

লেখক বার্ট্রান্ড রাসেল
প্রকাশক অবসর প্রকাশনা সংস্থা
আইএসবিএন
(ISBN)
9844150442
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৬৪
সংস্কার 3rd printed, 2012
দেশ বাংলাদেশ

দর্শনের ইতিহাসে সন্দেহাতীতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অন্যতম গ্রীক দার্শনিক প্লেটো সম্পর্কে বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের অভিমত ও মূল্যায়নের গুরুত্ব নিয়ে কোনাে বিতর্কের অবকাশ নেই। রাসেল তার বিখ্যাত ‘হিস্টরি অব ওয়েস্টার্ন ফিলােসফি’ গ্রন্থে ছয়টি আলাদা আলাদা প্রবন্ধে প্লেটোর দার্শনিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক চিন্তাভাবনার পর্যালােচনা ও মূল্যায়ন করেছেন সহজ সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায়। বর্তমান গ্রন্থটি রাসেলের সেই ছয়টি প্রবন্ধের অনুবাদ। বাংলা ভাষাভাষী দর্শনের ছাত্র শিক্ষক এবং সাধারণ দর্শন-অনুরাগীদের জন্য অনূদিত এই প্রবন্ধগুলি প্লেটোকে বুঝতে সহায়ক হবে। আর প্লেটো শুধু একজন ব্যক্তি-দার্শনিক বলে নয়, তার সময়ে তার দেশ সমাজ এবং পরবর্তী প্রায় দুই হাজার বছর ধরে সমগ্র পৃথিবীর মননশীলতায়, নৈতিকতায়, ধর্মচিন্তায়, বিজ্ঞানচর্চায় এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার যে প্রবল প্রভাব পড়েছে এবং এখনাে যে-প্রভাবের অনেকটা অটুট রয়েছে, সে বিবেচনায়ও আধুনিক মানুষের জন্য প্লেটোকে অনুধাবন ও উপলব্ধি করা জরুরি। প্রাচ্যে এবং পাশ্চাত্যে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনাপ্রবণতা ও চিন্তা পদ্ধতির কারণে প্লেটোকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা ও উপলব্ধি করার প্রয়াস লক্ষণীয়। ভিন্ন ভিন্ন, এমন কি বিপরীত দৃষ্টিকোণ থেকেও প্লেটোকে বিচার করার প্রবণতা বিদ্যমান। প্লেটোকে নিয়ে তাই আলােচনা এত বিপুল ও বহুমুখী। এই বিপুল ও বহুমুখী আলােচনার খুব সামান্যই অবশ্য বাংলা ভাষায় পাওয়া যায়। প্লেটো সম্পর্কে বার্ট্রান্ড রাসেলের অভিমত ও পর্যালােচনার এই বঙ্গানুবাদ শুধু প্লেটোকেই বিশদ জানার সুযােগ করে দিল না, বাংলায় দর্শনালােচনার জগতের সীমাহীন দৈন্যের কিছুটা অন্তত দূর করল। রাসেলের ইংরেজি গদ্যের অসাধারণ প্রাঞ্জলতা এবং আলােচনার সহজবােধ্যতা ও সুখপাঠ্যতা বাংলায় অটুট রাখার দুঃসাধ্য কাজটি সম্পাদিত হয়েছে। অনুবাদকের হাতে। উদার যুক্তিবাদী ইতিহাসনিষ্ঠ আধুনিক দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের দৃষ্টিতে প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক প্লেটোর আধা-যুক্তিবাদিতা ও আধা-মরমীবাদ যেভাবে ধরা পড়েছে এবং রাসেল যে-ভাষায় তা পণ্ডিত-অপণ্ডিত নির্বিশেষে সকল সাধারণ জ্ঞানানুরাগীর জন্য প্রকাশ করেছেন, তার বঙ্গানুবাদ বাংলা ভাষার শক্তিমত্তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

(১৮ মে ১৮৭২ – ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০) ছিলেন একজন ব্রিটিশ দার্শনিক, যুক্তিবিদ, গণিতবিদ, ইতিহাসবেত্তা, সমাজকর্মী, অহিংসাবাদী, এবং সমাজ সমালোচক.যদিও তিনি ইংল্যান্ডেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন, তার জন্ম হয়েছিল ওয়েলস এ, এবং সেখানেই তিনি ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
রাসেল ১৯০০ সালের শুরুতে ব্রিটিশদের আদর্শবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তাকে বিশ্লেষণী দর্শনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিবেচনা করা হয়, এর অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতারা ছিলেন তার শিষ্য ভিটগেনস্টেইন এবং পূর্বসূরি ফ্রেগে এবং তাকে ২০ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম যুক্তিবিদদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাসেল এবং হোয়াইটহেড একত্রে প্রিন্কিপিয়া ম্যাথমেটিকা নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তারা গণিতকে যুক্তির ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। তার দার্শনিক নিবন্ধ "অন ডিনোটিং" দর্শনশাস্ত্রে মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। দুটো গ্রন্থই যুক্তি, গণিত, সেট তত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব এবং দর্শনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।
তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত যুদ্ধবিরোধী ব্যক্তিত্ব এবং জাতিসমূহের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাস করতেন। তিনি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী। রাসেল তার অহিংস মতবাদ প্রচারের জন্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জেলবন্দী হন, তিনি হিটলারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান, সোভিয়েত টোটালিটারিয়ানিজম এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের সমালোচনা করেন এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে ছিলেন সর্বদা সোচ্চার।
রাসেল ১৯৫০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন, যা ছিল "তার বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ যেখানে তিনি মানবতার আদর্শ ও চিন্তার মুক্তিকে ওপরে তুলে ধরেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিরোধীর ভূমিকা নেন, ফলস্বরূপ তাঁকে ছ'মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। সেই সঙ্গে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে বরখাস্ত হন। ১৯৫০ সালে পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে আন্দোলন সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই কারণে ১৯৬১ সালে তাঁকে আবার কারাদনণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ১৯৭০ সালে বারট্রান্ড রাসেল মৃত্যুবরণ করেন।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ