“শাহজাদা দারাশুকো ১ ও ২” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
হিন্দুস্থানের বাদশা শাহজাহান তার বড়ছেলে শাহজাদা দারাশুকোকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন। কয়েকবার তিনি বলেছেন, আল্লাতালার অসীম করুণা—তাই এমন ছেলে আমি পেয়েছি। সেই ছেলে দারাশুকো সব ধর্মের ভেতর দিয়ে মানুষের ধর্ম খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। বাদশার সেজো ছেলে শাহজাদা আওরঙ্গজেব তার আব্বা হুজুরের স্নেহ ভালবাসা তাে তেমন পানই নি বরং প্রাণপণ লড়াই করেও বাদশার কাছ থেকে পেলেন কঠিন বাক্যবাণ, বদলির হুকুম, অপমান। আর লড়াই না করেও দারা পেলেন বিজয়ীর সংবর্ধনা। কট্টর মােল্লারা হিন্দুস্থানের পহেলা শাহজাদা দারাশুকোর মতিগতি বুঝতে না পেরে আঁতকে উঠলেন। ভাবলেন, দারার হাতে ইসলাম বিপন্ন। এমন শাহজাদা যদি হিন্দুস্থানের বাদশা হন তাে ঘাের বিপদ। মুঘল শাহী তাে যাবেই—ইসলামও হিন্দুস্থানে তলিয়ে যাবে । তাই মােল্লারা এসে দাড়ালেন আওরঙ্গজেবের পাশে। হিন্দুস্থানের মসনদকে ঘিরে ক্ষমতা, ধর্ম, ভালবাসা, ঈর্ষার এক গােল্লাছুট খেলা শুরু হয়ে গেল। খেলা ভাঙলে দেখা গেল মানুষের ধর্ম খুঁজতে গিয়ে শাহজাদা দারা তার মাথাটি হারিয়েছেন। হিন্দুস্থানে মুক্তদৃষ্টি, মুক্তবােধর স্বচ্ছন্দ চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। বাংলা ঐতিহাসিক উপন্যাসের সংজ্ঞা পাল্টে দেওয়ার জন্যে এ লেখাটি অত্যন্ত জরুরী ছিল।