“ভালোবাসা কোনো ঝরাপাতার শব্দ না” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
ফারজানা মিতুর ভালােবাসা কোনাে ঝরাপাতার শব্দ না পাঠকের জন্য এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। কবিতার বিরুদ্ধে দুর্বোধ্যতার অভিযােগ উঠেছে বহুদিন হলাে। কিন্তু ঠিক কোন কবিতাটি দুর্বোধ্য এবং কোন কবিতাটি দুর্বোধ্য নয়, এমন কোনাে মাপকাঠিও কারাে হাতে নেই। ফলে কবিতা হচ্ছে একেকজনের কাছে একেকরকম অনুভূতির ব্যাপার। যারা কবিতায় শব্দ ও বাক্যের নরম উপস্থিতি চান, পাশাপাশি চান একটু রহস্যের দোলাচল, রােজকার ও চিরকালের কিছু সত্যের মুখােমুখি হওয়া ফারজানা মিতুর কবিতা তাদের জন্য হবে এক মধুর অভিজ্ঞতা।
মিতু সহজাত কবি, তার কবিতা স্বতস্ফুর্ত। তিনি স্বতস্ফূর্তভাবে প্রশ্ন তােলেন তার অসমাপ্ত প্রশ্নগুলাে কবিতায়, “আমি আজো ভেবে অবাক হই/রাত জাগা কষ্টগুলাে,/কীভাবে সকালে এসে শেষ হয়ে। যায়?” কিংবা “আমি আজো ভেবে অবাক হই/বহু যত্নে ধরা ঘামসিক্ত হাত,/কীভাবে মানুষ ছেড়ে চলে যায়?” পাঠকের বোঝা হয়ে যায় এই কবি যেমন আন্তরিক ও স্পর্শী, তেমন তার জীবন। জিজ্ঞাসাও মৌলিক ও প্রবল।
আবার ভালােবাসি কথাটা বলেই দেখাে কবিতায় মিতু বলছেন, “একবার ভালােবাসি বলেই দেখাে/তারপর দেখাে কীভাবে বদলে যেতে থাকবে/এই ঢাকা শহর/আর কোনােদিন কোনাে মিছিল নামবে না রাস্তায়। আর কোনােদিন কেউ শুনবে না স্লোগান/… সােডিয়াম লাইট আর পূর্ণিমা হবে মিলেমিশে একাকার…”। এই যে ভালােবাসা আমরা এখানে দেখি, তা শুধু নিজস্ব বা ক্ষুদ্র পরিসরে নয়, তা সামগ্রিক ও মঙ্গলময়।
এ বইটি তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। তৃতীয় কাব্যগ্রন্থেই দেখি তিনি গ্রন্থের চরিত্র নির্মাণে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। বােঝা যায়, অকৃত্রিম এই কবি কবিতার ভুবনে থাকতেই এসেছেন, জীবন ও ভালােবাসার কথা বলে তাড়িত হতে ও পাঠককে মৌলিক অনুভূতি ও চিন্তার খােরাক জোগাতে এসেছেন।