“ওই চাঁদ তোমার আমার” বইয়ের পরিচিতি:
একরাতে আমি স্বপ্ন দেখলাম। সমুদ্র ভর্তি নীলপদ্ম! গাঢ় নীল হয়ে গেছে পুরাে সমুদ্র, এত অপূর্ব দৃশ্য যে, আনন্দে আমার কান্না পেয়ে গেলাে। আমি হাত বাড়িয়ে সেই পদ্ম তুলতে গেলাম, কিন্তু ঢেউয়ের তােড়ে তা দূরে চলে গেলাে; আমি আবার তুলতে গেলাম, ঢেউ এসে নিয়ে গেলাে। বারবার আমি পদ্ম তুলতে যাই বারবার ঢেউ আসে। আমি আশেপাশে তাঁকিয়ে অস্থির হয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম, কেউ এসে আমায় নীলপদ্ম তুলে দেবে? হাতে দিয়ে বলবে, নিন, পদ্ম গালে ছুঁইয়ে মন শান্ত করুন। আর তখন আমি নীলপদ্ম গালে নয়, বুকে জড়িয়ে মন শান্ত করবাে। একসময় কেউ এলাে, নীল শাড়ি পড়ে। আমি তাঁর দিকে তাঁকিয়ে অভিভূত! সমুদ্রের নীলপদ্ম আর তাঁর মাঝে অদ্ভুত মিল। আমি তাঁকে দেখে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, —তুমি কি নীলপদ্মের রাণী? নীলপদ্মের সমুদ্রটা কি তােমার? সে রাগী রাগী চোখে তাঁকিয়ে কঠিন স্বরে বললাে, —আমি নীলপদ্মের রাণী হতে যাবাে কেনাে? আমি মেঘের রাজ্যের রাণী, আমার কথা ছাড়া বৃষ্টি হয়না। আমার নাম মেঘবতী… বলেই সে হাঁটতে লাগলাে। আমি সমুদ্র ভর্তি নীলপদ্ম ফেলে তাঁর পিছু পিছু ছুটতে লাগলাম! ওই সমুদ্রের নীলপদ্ম আমি চাই না। আমার এই মেঘরাজ্যের নীলপদ্মের মত রানীকে চাই। ছুটছি তাে ছুটছিই…. এই ছুটোছুটির মাঝেই আমার ঘুম ভাঙে, স্বপ্ন ভাঙ্গে! আমি হাত দিয়ে দেখি আনন্দে আমার চোখ ভিজে আছে। আমার নীলপদ্ম ভরা সমুদ্রের মত জীবনে, আমি এই মেঘবতী নামের নীলপদ্মের পিছনে ছুটে বেড়াই, আর এতেই যে আমার আনন্দ! এই আনন্দের নাম কি? “মনের টান” নাকি অন্যকিছু? সেই অন্যকিছুটা কি?