“আত্মবিভাজনের খেলা (লামেদ-ওয়াফ)” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
প্রথম কাহিনীতে একটি মাত্র ভুল শব্দ উচ্চারণ করলেই অশােক সহায়কে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হত না। কী সেই শব্দ? ‘শত্রু। শত্রু এমন একটি শব্দ যার উৎসমূল ঘৃণা। মানুষের সবচেয়ে নিকৃষ্ট আবিষ্কার এই বিষাক্ত শব্দটির তাৎপর্য সম্পর্কে অবহিত ছিল অশােক। তাই দাঙ্গাবাজ-খুনিদের হুকুমমতাে সে তার প্রিয় বন্ধু ইবরাহিম তিরমিজকে শত্রু হিসেবে ঘােষণা করতে অস্বীকার করে। দাঙ্গাবাজদের আক্রমণে সদ্যনিহত পুত্র, পুত্রবধূ এবং তার গর্ভজাত সন্তানের শোকে বিপর্যস্ত ইবরাহিম যখন অশােকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা জানতে পারে তখন কেমন হয় তার প্রতিক্রিয়া? যেখানে অশােক নিহত হয়, ঠিক সেখানেই তার শােকসভার আয়ােজন করতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ইবরাহিম।
দ্বিতীয় কাহিনীতে কিশাের ইনসান মায়ের খোঁজে বেরিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে এসে দেখে, বাবা। নেই। এবার ওদের দুজনের খোঁজ করতে গিয়ে। দেখে, নানি হারিয়ে গেছে! তারপর মা বাবা নানি মামা প্রিয় বন্ধু সুদীপ এবং বুলা একে একে সমস্ত আত্মীয়-বন্ধুরা সবাই যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। মানুষ কোখেকে আসে, কোথায় হারিয়ে যায়? ইনসান তার সমস্ত আত্মীয়-বন্ধু, সম্পদ-সম্মান। সবকিছু হারিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন-নিঃস্ব-রিক্ত অবস্থায় লাভ করে এক অতি আশ্চর্য বস্তু—অসুস্থ পৃথিবীর আত্মা! অসুস্থ পৃথিবীর আত্মা দিয়ে সে কী করবে? তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে। এই তার নবলব্ধ দায়িত্ব। এই বিচিত্র দায়িত্ব যে-মানুষ পালন করতে পারে, সে-ই লামেদ-ওয়াফ অর্থাৎ খাঁটি মানুষ।