ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা
মানুষ শহীদ কাদরী ক্ষণজন্মা। তাঁর কবিতা বিরলপ্রজ। পৃথিবীজুড়েই এই ধরনের কবি বিরল। তাঁরা কবিতা লেখার আগেই মস্তিকের নির্ঘন্ট প্রতিটি শব্দের ভাঁজ খুলে পরখ করে নেন সেই শব্দের সৌন্দর্য ও তাৎপর্য। মস্তিকের সেই বিজনেই সেরে নেন ঘষামাজা, সম্পন্ন করেন একটি লিখিত হয়, সেটিই কবির নির্বাচিত কবিতা। অন্য অর্থে শ্রেষ্ঠ কবিতাও।
শহীদ কাদরী সেই ধরনের কবি। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত তৃতীয় কাব্যগ্রন্থের পর ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ তাঁর চতুর্থ গ্রন্থ। প্রায় অর্ধশতকের সাহিত্যজীবনে তিনি লিখেছেন মাত্র শ’দেড়েক কবিতা। তা সত্ত্বেু এই সাত্ত্বিক কবি বারবার নিজেকে নবায়ন করে নিয়েছেন। পৃথিবীর নানা দেশে বসবাস করেছেন কিন্তু বৈরাগ্য তাঁকে আপ্লুত করে নি। বরং সময়ের ভাঙচুরকে শিরোধার্য করে তিনি মেনে নিতে কুন্ঠিত হন নি য়ে তাঁর আরাধ্য মানুষ, সমাজ, ভালবাসা এবং পরবাস। জীবনের সমাজের নানা মাত্রিক স্তরকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যক্ষ করার নিরন্তর প্রচেষ্টা তাঁর কবিতার পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
লেখার সংখ্যা সামান্য হলেও কবিতায় বাঙ্ময় জীবনদর্শন অসামান্য এবং সম্পূর্ণ, দৃষ্টিভঙ্গি ও নিঃসংশয়, পর্যবেক্ষণ তীক্ষ্ণ ও সূক্ষ্ম, প্রকাশ অনবদ্য ও মেদহীন। তাঁর কবিতার অন্তর্গত যাবতীয় বোধ দেশকালের সীমানাকে ডিঙিয়ে আধুনিকতার নির্মাল্য হয়ে উঠেছে।
সন্দেহাতীতভাবে শহীদ কাদরী বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের একজন।
সূচিপত্র
*স্বতন্ত্র শতকের দিকে
*সেই সময়
*আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও
*আপনারা জানেন
*একে বলতে পারো একুশের কবিতা
*বিপ্লব
*হন্তারকদের প্রতি
*শীতরাত্রির স্বপ্ন
*কক্সবাজারে এক সন্ধ্যা
*তাই এই দীর্ঘ পরবাস
*তুমি
*পথে হলো দেরি
*সব নদী ঘরে ফেরে
*সবাই তাকে ছেড়ে গেছে
*স্বপ্নে-দুঃস্বপ্নে একদিন
*প্রজ্ঞা
*শূন্যতা
*গাছ, পাথর, সমুদ্র
*কোনো নির্বাসনই কাম্য নয় আর
*কোথায় প্রবেশাধিকার
*নিষিদ্ধ পল্লীতে
*স্বগতোক্তি
একা
*স্মৃতি-বিস্মৃতি
*প্রবাসের পঙ্ক্তিমালা
*মধ্যবয়স
*আমরা তিনজন
*অন্তিম প্রজ্ঞা
*অসমাপ্ত বক্তব্য
*যাত্রা
*রীতি বিষয়ক কয়েকটি পঙ্ক্তি
*গন্তব্য
*বিব্রত সংলাপ
*কাক
*কবি
*নিরুদ্দেশ যাত্রা