অবিস্মরণীয় এক মুক্তিযুদ্ধে স্বদেশভূমি স্বাধীন হওয়ার তিন দশকের বেশি সময় পরে স্বপ্নপূরণ না হওয়ার এক হাহাকার চতুর্দিকে। অনেকের কাছে স্বপ্ন জীর্ণ, এবং হারিয়েও যাচ্ছে। মাতৃভূমি অচেনা হয়ে যাচ্ছে। বিজয়ের ৩৪তম বার্ষিকীতে ‘সমকাল’-এর সম্পাদকীয় পরিকল্পনায় আমরা অনেকটা সংশয়াচ্ছন্ন ভীরু মনে হঠাৎ আলাে ফেলে দেখতে চাই তরুণ প্রজন্মের হৃদয়কন্দরে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন-সম্ভাবনা কতটুকু জাগরূক। প্রস্তাব নিয়ে যাদের কাছে হাজির হই তারা আমাদের বিচারে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর প্রজন্ম,যারা মুক্তিযুদ্ধে লড়েছেন অল্প বয়সে, জন্মেছেন মুক্তিযুদ্ধের অনতি আগে, মধ্যে বা পরে পরেই। বেছে নিই তাঁদেরই যাঁরা মেধার পরিচয় রেখেছেন, সাফল্যের দু’একটি চৌকাঠ ডিঙিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন। মাতৃজঠর ছেড়েই যে মাতৃভূমিতে তাঁরা পা রাখেন সেটা তখন, এবং এখনাে, অনেকটাই তপ্ত । আমরা সবিস্ময়ে আবিষ্কার করি যে, এই প্রজন্মের অগ্রণীদের হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের ছাইচাপা আগুন অনেক অনেক বেশি উত্তাপ নিয়ে সঞ্চিত রয়েছে। সেখানে দেশ ও মানুষের জন্য হা-হুতাশের পরিবর্তে আছে আশা, সংকল্প, প্রেম, প্রতিরােধস্পৃহা ও যথার্থ কাজটি করার আকাঙ্ক্ষা। বাস্তবতার উপলব্ধি আছে কিন্তু স্বপ্ন আছে দুর্মর। চিন্তার ভিন্নতা আছে কিন্তু শ্রেয়বােধে অভিন্ন। এটাই পরম আশ্বাসের জায়গা। এই আশ্বাসে উদ্বুদ্ধ হয়েই তাৎক্ষণিক আয়ােজনে সংগৃহীত কিছুটা অবিন্যস্ত ধরনের রচনাগুলোকেও আমরা গ্রন্থবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিই।