“নান্দনিক তিরিশ কবির শিল্পচৈতন্য” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
রবীন্দ্রোত্তর বাংলা সাহিত্যের প্রধান পাঁচজন কবি জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু ও বিষ্ণু দে’র কাব্যসম্ভার বাংলা সাহিত্যকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু তারা কেবল কবিতাই লেখেননি, নিজেদের সাহিত্যকেন্দ্রিক বিচিত্র ভাবনা ও অনুভূতি নিয়ে নানা প্রবন্ধও লিখেছেন। সেইসব প্রবন্ধে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাদের স্বকীয় নন্দনবিশ্ব। প্রকৃতপক্ষে, তাঁদের নন্দনতত্ত্ব-কেন্দ্রিক প্রবন্ধসমূহ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচিত্র ও স্বভাবে প্রাতিস্বিক, আয়তনে বিপুল, প্রসারে বৈশ্বিক, চেতনায় মহাবৈশ্বিক। কিন্তু এ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ গবেষণার তেমন নমুনা পাওয়া যায় না। এর একটি কারণ, কাজটি সহজ নয়। “নান্দনিক তিরিশ: কবির শিল্পচৈতন্য” গ্রন্থটিতে আবু দায়েন এই কঠিন কাজটি যােগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গেই সম্পন্ন করেছেন। তিরিশের প্রধান কবিদের রচনাসমূহকে প্রাথমিক পর্যায়ে এককভাবে, এবং পরে যৌক্তিক ধারাবাহিকতায় পরস্পর-সাপেক্ষতার বিবেচনায় তুলনামূলকভাবে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেছেন। তিরিশের কবিদের প্রবন্ধে বর্ণিত বিভিন্ন লেখক ও শিল্পতাত্ত্বিকের মূল রচনা, লেখকদের ওপর তাদের প্রভাব, দার্শনিক বৈপরীত্য ও সাযুজ্য যেমন বিশ্লেষণ করেছেন, তেমনই সাহিত্যকেন্দ্রিক চিন্তাধারার অগ্রসরমানতা ও পরিণতিমুখিতার রূপরেখাও নির্মাণে সচেষ্ট হয়েছেন। বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে নন্দনতত্ত্ব এবং সাহিত্যতত্ত্বের আলােচনা এ গ্রন্থটিকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।