ফ্ল্যাপে লিখা কথা
মাহবুব সাদিক
জন্ম : ২৫ অক্টোবর ১৯৪৭, ৭ কার্তিক ১৯৫৪
টাঙ্গাইল জেলাশহরের কাছাকাছি আইসড়া-য় জন্ম। মানুষের কল্যাণব্রতে নিয়োজিত পিতামাতার জ্যেষ্ঠসন্তান।
প্রাথমিক শিক্ষা মায়ের কাছে, গ্রামের স্কুলে তারপর জেলাশহরের বিন্দুবাসিনী স্কুলে, উচ্চমাধ্যমিক সা’দত কলেজে,স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি গবেষণা করেছেন বুদ্ধদেব বসুর কবিতা বিষয়ে। পেশা অধ্যাপনা।
প্রথমজীবনে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন রাজনীতিতেম সর্বহারা মানুষের জন্য কাজ করেছেন, কখনো ডুব দিয়েছেন মানবজলে। সাঁতরে বেড়িয়েছেন, ভেসে উঠেছেন আবার। একাত্তরে, যুদ্ধের শুরুতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধে, খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা।
সাহিত্যচর্চার শুরু স্কুলজীবনে। শেষষাট ও সত্তর দশকের গোড়া থেকেই কবি হিসেবে বিখ্যাত; কবিতার সঙ্গে নিরলসভাবে লিখছেন ছোটগল্প, উপন্যাস ও আধুনিক সাহিত্যবিষয়ে প্রবন্ধ। তাঁর কবিতায় বিম্বিত হয়েছে তাঁরই অবলোকিক বিশ্ব, তার চিন্তা ও অভিজ্ঞতার স্বতন্ত্র জগৎ, শতাব্দীর পর শতাব্দীব্যাপী মানুষের অতীত আবেগ-ঐশ্বর্যের রূপবিভা, ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্প্রতি মিলন এবং বাঙালির শ্বাশত ও বর্তমান জীবনধারা।
তাঁর কবিতায় ছায়া ফেলে নিসর্গ ও নগর, শ্যামলপ্রদেশ ও যন্ত্রবিশ্বের জটিলতা এবং অস্থির আন্তর্জাতিক পৃথিবী। সমরশাসকের প্রেত ও আর্থরাজনীতির চাপে নিষ্পিষ্ট মানুষের উন্মুলসত্তা ও তুচ্ছতাবোধ অনুভূত হবে তাঁর কবিতায়। তাঁর আবেগ-চিন্তা প্রায়ই প্রকাশরূপ পায় সংহত ও অবিস্মরণীয় চিত্রকল্পে; কল্পনার দ্যুতি-বিচ্ছুরিত উপমা-রূপক-প্রতীকে; ধ্বনিসাম্যে কবিতায় কখনো বেজে ওঠে সিস্ফিনি শব্দ ও ছন্দের গূঢ় মিথষ্ক্রিয়ায় কোনো আনন্দ নৃত্য কখনো। বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ তাঁকে একালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিরূপে চিহিৃত করেছে।
বাংলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্যে মাহবুব সাদিক একটি বিশিষ্ট নাম। বুদ্ধদেব বসুর কাব্যনাট্য বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে তিনি প্রয়োগ করেছেন, আধুনিক মনোভঙ্গি এবং বহুমাত্রিকা দৃষ্টিকোণ।
বাংলা একাডেমী পুরস্কার সহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন-বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান এ লেখক।