“মণিকাঞ্চন: এক বাঙালির রূপকথা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
মণিলাল ভৌমিকের জন্ম ১৯৩১-এ, তমলুকের এক হতদরিদ্র গ্রামে। ছেলেবেলা কেটেছে কুঁড়ে ঘরে। যােলাে বছর বয়সেও পায়ে জুতাে পর্যন্ত জোটেনি। কিন্তু শুধু সাহস, নিষ্ঠা, অক্লান্ত জীবনসংগ্রাম, মেধা, মৌলিক মনন ও নিছক প্রতিভা—এই ছয়ের জোরেই তিনি আজ আন্তর্জাতিক বাঙালি। বারােটি এক্সিমার লেজার-এর আবিষ্কারক তিনি। আই আই টি-তে ইলেকট্রনিক এনার্জি ট্রান্সফার নিয়ে গবেষণা করার পর মণি গিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্লোন ফাউন্ডেশন ফেলােশিপ পেয়ে। সেখান থেকে নর্থরপ কর্পোরেশন ল্যাবরেটরিজ-এর রিসার্চ ডিরেক্টর। তিনি যুগপৎ ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স এবং আমেরিকান ফিজিকাল সােসাইটির ফেলাে। এখন কসমােজেনিক্স-এর প্রেসিডেন্ট। এই সংস্থার কাজ মহাকাশ বিষয়ে গবেষণা। মণি ভৌমিকের সাম্প্রতিকতম গবেষণা অ্যানথ্রপিক কসমােলজিকাল প্রিন্সিপাল’ নিয়ে, যার বক্তব্য, আমাদের মতাে সচেতন মননশীল জীবের অংশগ্রহণ ছাড়া এই বিশ্ব সম্পূর্ণ নয়। তাঁর বর্তমান জীবন ঠিক রূপকথার মতাে। পরিচিত বাঙালি-জীবনের আলােকবর্ষ দূরে। কীভাবে, কোন পথে মণিলালের মতাে গরিব মানুষও শেষ পর্যন্ত পৌঁছতে পারলেন পরবাসে খ্যাতি ও সম্পদের শিখরে? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজতে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে গিয়েছিলেন তমলুকে, শ্রীভৌমিকের গ্রামে এবং ভিটায়। পরে, লস এঞ্জেলেস-এ, ভৌমিকের নির্জন বিলাসনিলয়ে এবং তাঁর গবেষণাগারে। মণিকাঞ্চন’ এক দীর্ঘ পরিশ্রমী গবেষণা ও সন্ধানের সারাৎসার : এক গরিব বাঙালির অবিশ্বাস্য সাফল্যের কাহিনী। এই বই মণি ভৌমিকের প্রথম অনুমােদিত জীবনী।