মোঘলশাহী” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য এশিয়ার দু’শাে বছরের ইতিহাসের বিশাল পরিসরের প্রায় সবকটা পৃষ্ঠা জুড়েই রয়েছে মােঘলশাহির সুদীপ্ত অধিষ্ঠান। এই ইতিহাসের অনেক ধূসর পৃষ্ঠা যদিও বারবার রক্তিম হয়ে উঠেছে যুদ্ধবিগ্রহের রক্তক্ষরণে, প্রেমপ্রীতির হিল্লোলে আবার তা হিরন্ময় হয়ে উঠেছে কখনাে-সখনাে। জয়পরাজয়ের বিস্তীর্ণ রণাঙ্গনের বাইরে মােঘলশাহির ইতিহাসের অন্য একটা সুখােষ্ণ অঙ্গনও রয়েছে। এই অঙ্গনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের আলােছায়ায় ছাওয়া টুকরাে টুকরাে নানা ঘটনা, রাজন্যবর্গের প্রেম-প্রীতির নানান আখ্যান রয়েছে। ঐতিহাসিকদের অগােচরে রয়ে যাওয়া অনেক অজানা ঘটনা আর সরস কাহিনি।
রাজসিক সুধাসিক্ত এসব কাহিনির সন্ধানে ইতিহাসের রাজপথ ছেড়ে অলিগলি পথে আমি হেঁটেছি বহুদূর। মােঘলশাহির ইতিবৃত্ত ঘেঁকে তুলে আনা অনেক চমক জাগানাে ঘটনা আর নানা বিচিত্র কাহিনির সন্নিবেশে সাজানাে হয়েছে এই বইটি। মােঘলশাহির কুশীলবদের জীবনে পুঞ্জীভূত বিচিত্র ঘটনাবলি রূপকথার মতােই রােমাঞ্চকর। তাঁদের জীবন কাহিনি নিয়ে লেখা হয়েছে উপন্যাস, নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র। কিন্তু ইতিহাসের প্রকৃত সত্যের দেখা খুব কমই মেলে এসব উপন্যাস ও চলচ্চিত্রে। তাই এই বইটি লিখতে গিয়ে আমি সর্বান্তকরণে চেষ্টা করেছি আমার লেখায় ঐতিহাসিক সত্যের যেন কোনাে ব্যত্যয় না ঘটে। বইটিতে গল্পের আদলে ইতিহাস উঠে এলেও ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে গল্প সরে আসেনি এক বিন্দুও। সাহিত্যের শিল্পিত দিকটি বজায় রাখতে গিয়ে সংলাপ রচনার ক্ষেত্রে কিছুটা কল্পনার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।