গ্রন্থটিতে ইংরেজ আমলের শাসন ও সাম্প্রদায়িকতা এবং ভারতবর্ষের স্বাধীনতা বিষয়ে বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে। ইংরেজ আমলে এদেশের অধিবাসী ছিল মূলত হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়। সংখ্যায় হিন্দু সম্প্রদায় তিন চতুর্থাংশের বেশি ছিল। পরবর্তীতে মুসলমান শাসকদের উদারতা এবং সহমর্মিতার কারণে বৌদ্ধ ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের একটি বড় অংশ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এ প্রসঙ্গে শৈলেশ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাঙ্গার ইতিহাস গ্রন্থের একটি উদ্ধৃতি প্রণিধানযােগ্য শতাব্দী অত্যাচার ও শােষণ। মুসলিম শাসন আমল (১২০৪-১৭৫৭) অর্থাৎ তুর্কি ও মুঘল আমলে এদেশে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান ছিল। এ সময়ে কোন সাম্প্রদায়িক সংঘাত ঘটেনি। তুর্কি ও মুঘলেরা এদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেছেন। তাদের এ দেশীয় সন্তান সম্রাটও হয়েছেন। এদেশ লুণ্ঠনের কোন প্রয়ােজন তাে তাদের হয়ইনি বরং এদেশকে তারা শিল্প, সাহিত্য, ব্যবসাবাণিজ্য ও স্থাপত্যে সমদ্ধ করেছেন। পারস্য, আরব, মিশর ও তুর্কী সমাটরা কষ্টি, শিল্প, সাহিত্য, স্থাপত্য ও সমরবিদ্যায় ভারতকে করেছে সমদ্ধশালী। ভারত তখন শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে পৃথিবী খ্যাত ছিল, ঢাকা ও মুর্শিদাবাদ তখন খ্যাত ছিল ‘মসলিন কাপড়ের জন্য। যা ইউরােপে রপ্তানী হতাে। স্বনামধন্য ভারতীয় লেখক শশী থারুরের ভাষায় ব্রিটিশ ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষ নামে যে দেশটিকে দখল করেছিল, সেটা কোন আদিম পশ্চাৎপদ এবং অনুর্বর দেশ ছিল না, বরং বলা যেতে পারে মধ্যযুগের ‘মুক্তার মতাে একটি অত্যুজ্জ্বল দেশ ছিল। শশী থারুর The Looting of India নামক গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়েই ইংরেজ কর্তৃক ভারতবর্ষের ঐশ্বর্যের লুটতরাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।