বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ও চরিত্রের একসূত্রে গেঁথে যাওয়ার মধ্য দিয়ে পূর্নতা পায় এউপন্যাসের কলেবর। গল্পের শুরু এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার মাধ্যমে। সেখান থেকে গল্প চলে যায় বৌ পেটানো স্বামীর বাড়িতে। তার সংবেদনশীল দেবর শীৎকারের মানে বুঝলেও ভাবীর আর্তচিৎকার বুঝতে অপারগ। অন্যদিকে প্রতিদিন মার খাওয়া বৌটা বুঝতে পারে, রোজ প্রেমে পড়ার মতো প্রতিদিন মরে যাওয়াটা এত সহজ না। মরে যেতে যেতে আমরা ভুলে যাই, বেঁচে থাকাটা কেমন?
এক উড়নচন্ডী কবির সাথে পরিচয় হয় তার। যে লেখার মায়ায় পাঠককে ডুবিয়ে রাখতে পারলেও কাছের সম্পর্কগুলোকে গুছিয়ে নিতে পারে নি। শরীর ছুঁয়ে যেমন নারী হৃদয় স্পর্শ করা যায় না তেমনি পুরুষের ভালোবাসা পেতে হলে ছুঁতে হয় তার বিশ্বাস। কিন্তু বিশ্বাসভঙ্গের যন্ত্রনায় কেউ এক ছাদের নিচে থেকেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রিয় মানুষটার সাথে কথা বলে না। কেউ জীবনের সব অপূর্নতার মধ্যে খুঁজে ফেরে সৌন্দর্য। অপ্রাপ্তি কাউকে করে তোলে প্রতিশোধপরায়ন। কেউ অঝোর বর্ষায় দু’হাত ডানার মতো ছড়িয়ে কেঁদে ওঠে পিছুটানে।
ট্রাক ড্রাইভার শম্ভু বেপরোয়া গাড়ি চালানোর খেসারত দিতে গিয়ে করে আজীবন প্রায়শ্চিত্য। রেস্টুরেন্টের ভেজাল খাবার খেয়ে মৃত সন্তানের প্রতিশোধপরায়ন বাবা হয়ে ওঠেন ভাড়াটে খুনি। কাঙাল প্রেমিকের মেরুদন্ডহীনতা ও একা মায়ের কান্না গিলে ফেলা অতীত ভেসে যায় বৃষ্টিতে। চিত্রপরিচালক ছুটে বেড়ান স্বপ্নের সিনেমার পেছনে। এযেন অমোঘ মোহের টানে ছুটে চলা। মোহ জিনিশটাই এমন, তৈরি হতে সময় নেয় না, কাটতেও লাগে কয়েক মিনিট। কিছু মোহ দীর্ঘজীবী। লোভ, পাপ, যৌনতা ও ঘৃণার দোলাচলে কেটে যায় এক জীবন। যে জীবনে প্রতি বাঁকে ওঁৎ পেতে থাকে রহস্য। চমকে উঠতে হয় সম্পর্কের দ্বদ্বে। কখনো ভয় হয়, কখনো বা ভালো লাগে। একদিকে থ্রিলারের মতো টেনশন। আবার উথাল পাতাল প্রেম। সবকিছু ফিকে হয়ে এলেও কেউ কেউ জীবনের মানচিত্রে স্থায়ী দাগ রেখে যায়। তাদের ভোলা যায় না। তারা কখনো পুরনো হয় না।