রাত এগারোটা।
আসমদ খেতে বসেছেন। জহির আজ দুপুরে পাঁচ কেজি ওজনের একটা কাতল মাছ নিয়ে এসেছে। সেই মাছের রান্না করা পেটি আসমদের পাতে দেওয়া হয়েছে। খাওয়াদাওয়ার মাঝখানে পাপন ঘরে ঢুকল। সমস্ত শার্ট ঘামে ভিজা। তাকে একজন ফোন করে খবর দিয়েছে যে, ধলেশ্বরী নদীর তীরে খোকনের মতো দেখতে একজনের লাশ ভেসে উঠেছে।
আসমদ খাবার টেবিল থেকে উঠে পড়লেন। বারান্দায় গিয়ে বসলেন। বকুল বললেন, অসম্ভব! খোকনের লাশ হতেই পারে না। বকুল কান্নায় ভেঙে পড়লেন। শিউলি অজ্ঞানের মতো হয়ে গেল। ওইদিকে ছবি আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগল। মুহূর্তে পাড়া মহল্লায় থমথমে পরিবেশ তৈরি হলো।
আসমদের খোকন সম্পর্কে অনেক কথাই মনে পড়ছে।
বাবা।
বল।
মেলাতে যাব।
মেলায়?
হুঁ।
খুব ইচ্ছা করছে ?
হুঁ, নিয়ে চল।
কী চাই তোর ?
খোকন ছোট ছোট ভাঙা দাঁতগুলি বের করে অনায়াসে বলে ফেলল, একটা বন্দুক। পুলিশরা কেমন কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আসমদ চেয়ারে নড়েচড়ে বসলেন। চোখ মুছলেন। খোকন তার দরিদ্র পিতাকে মুক্তি দিয়ে গেছে। হঠাৎ ঘাড় বাঁকিয়ে হাসতে লাগলেন।