ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের নব আবিষ্কার লিটনকে খুব একটা টানত না। নতুনের প্রতি বা নতুন জিনিসের প্রতি তার মধ্যে কেন জানি একটু ভয় ও দ্বিধা কাজ করত। তাই বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার প্রতি কোনো আগ্রহই লিটনের ছিল না। লিটনদের সময় একটা স্কুুল থেকে কমপক্ষে এক থেকে ত্রিশ রোল পর্যন্ত সবাই বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হত। স্বাভাবিকভাবে লিটনের স্কুলের স্যাররাও চাইলেন যে লিটন বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হোক। আর অন্য দশজন মায়ের মতো লিটনের মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ডাক্তার বানাবেন। লিটনের যেহেতু বিজ্ঞানের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না, তাই সে মহাবিপদে পড়ে গেল। নিজের ইচ্ছা পূরণ করতে তাকে শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়ের সঙ্গেও যুদ্ধ করতে হলো। লিটন যখন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেয় তখন খুলনা এবং বরিশাল বিভাগ যশোর বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে লিটন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার ফলাফলে বাণিজ্য বিভাগ থেকে সম্মিলিত মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থান অর্জন করে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিল। এরপর লিটন যুদ্ধসম ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটে প্রথম বিশজনের মধ্যে জায়গা করে নিল এবং হিসাববিজ্ঞানে মেজর নিয়ে বিবিএ পড়া শুরু করল। লিটনের জীবনের লক্ষ্য ছিল তার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক হওয়া। কিন্তু গ্রাম থেকে আসা লিটনের মধ্যে থাকা কিছু সেকেলে মন-মানসিকতা, সৎপরায়ণতা এবং লবিংয়ের যোগ্যতার ঘাটতি তার লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াল। লিটন বিবিএ শেষ বর্ষে এসে সিএ পড়ার ব্যাপারে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। আর এমবিএ পড়ার সময় ঐচ্ছিক কোর্স বাছাইয়ের ক্ষেত্রে লিটন সিএ ইনস্টিটিউটের সিলেবাসের সাথে মিলিয়ে কোর্স নির্বাচন করল এবং এমবিএ ইন্টার্নশিপও সিএ ফার্ম থেকে সম্পন্ন করল। অবশেষে লিটন বিবিএ এবং এমবিএ উভয়ক্ষেত্রে ভালো রেজাল্ট করে প্রথম পাঁচজনের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিলো এবং আগে থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিএ পড়ার দিকে পা বাড়াল।