“সভ্যতা” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
সভ্যতার শুরুতেই মােতাহের হােসেন লিখেছেন :
বেল সাহেব তার বইখানি লেখেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে। যুদ্ধ ও তার পরবর্তীকালের কলঙ্ক-কুশিতা তাকে ওই যুক্তক রচনায় নিয়ােজিত করে। সে সময়ে মিত্রশক্তির মুখে ছিল সভ্যতার দোহাই, কিন্তু সভ্যতা আসলে কী বস্তু, তা তারা ভালাে করে বুঝে উঠতে পারেননি। লেখক নিজেও যে পেরেছিলেন, তা নয়। তাই সভ্যতা প্রকৃতপক্ষে কী, তা নিজেকে ও অপরকে বােঝাবার জন্য তিনি এ পুস্তক রচনা করেন। আমার এই রচনার মূলেও আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও আমাদের দেশের অতি কদর্য হিন্দু-মুসলমানের বিরােধ। এক কথায় এ কালের কলঙ্ক-কুশিতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সভ্যতার নামে হয়েছিল। আমাদের দেশের হিন্দুমুসলমান দ্বন্দ্বও সংস্কৃতি-সভ্যতার নামে হচ্ছে। সংস্কৃতি ও সভ্যতা সাধারণত কী বস্তু, তা ভালাে করে না জেনেই আমরা বিশেষ সংস্কৃতি ও সভ্যতার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছি। দৃষ্টি আচ্ছন্ন হয়ে আছে বলে এতে আমাদের বিশেষ ক্ষতি হচ্ছে।…অহং মিশ্রিত মােহ থেকে মুক্তি পেয়ে মানুষ সহজভাবে সংস্কৃতি ও সভ্যতার পানে তাকাতে সক্ষম হবে, এই ভরসাতেই আমি বেল সাহেবের অনুসরণে এই বইখানি লিখবার প্রেরণা অনুভব করি।