উনিশ শতক এক উত্তাল সময়। ইংরেজি শিক্ষার অভিঘাত, সমাজ সংস্কারের ফলে ভাঙনের গর্জন, রক্ষণশীল সমাজে গেল গেল রব, ব্রাহ্মধর্মের প্রসার- সব মিলিয়ে বাংলাদেশ তখন উদ্বেল- তার অনড় অচল জীবনচর্চায় নবজাগরণের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। বাঙালির সংস্কৃতির নির্মিত হয়েছিল উনিশ শতকের তৃতীয় চতুর্থ পর্বে- উচ্চশিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি গৃহে। সমাজের সেই পর্ব নিয়ে অনেক লেখালেখি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। সেই সব গুরুগম্ভীর আলােচনায় না গিয়ে তখনকার জনগণের নায়কদের জীবনের নানা উজ্জ্বল কিন্তু কৌতুকহল দিক তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই বইয়ে। সে আমলের বিয়ের আসর ও বাসর ছিল হবু বরের জন্য এক মহারণক্ষেত্র। এই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে যে কজন যােদ্ধা বিজয়ী হয়ে ফিরেছিলেন তাদের অন্যতম হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর – বয়স মাত্র চৌদ্দ কি পনেরাে। বিবাহবাসরে তার কৌতুকপূর্ণ ভূমিকা তিনি নিজ মুখে বলে গেছেন- যাকে ঘিরে একটি সরস লেখা এখানে উপস্থাপিত হয়েছে। ঐতিহাসিক গবেষক প্রত্ন সংগ্রহক ঢাকা জাদুঘরের প্রথম ৩৬ বছরের অধ্যক্ষ নলিনীকান্ত ভট্টশালীর অবদান ও অসাধারণ একক প্রচেষ্টার অনেক অজানা তথ্য পরিবেশিত হয়েছে নলিনীর জাদুঘর প্রবন্ধে। জীবনানন্দের রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ আত্ম প্রকাশিত হওয়ার কাহিনি যেমনি রােমাঞ্চর তেমনি স্মৃতিবিধুর কবি নিজেই বইটি জনসম্মুখে তুলে ধরতে চাননি তার সবচেয়ে জনপ্রিয় এই গ্রন্থের নামটাও তার দেয়া নয়। এই বইয়ে আটটি নানা স্বাদের নানা বর্ণের রচনা। এক থালায় পরিবেশিত হয়েছে। তাই এই বই এর। নাম- অষ্টব্যঞ্জন।