মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসে মায়ের আত্মত্যাগ যতখানি বিশালাকারে স্থান পেয়েছে, বাবার অবদান কি ততটাই স্থান পেয়েছে? রিয়াজ ফাহমীর এই উপন্যাসটি সেক্ষেত্রে নিশ্চিত কৃতিত্বের দাবীদার।
উপন্যাসটির সময়কাল ১লা মার্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব তথা এপ্রিল/মে পর্যন্ত। উপন্যাসটি অনেকগুলো চরিত্র আর ঘটনার সমন্বয়ে গড়া। সেই কঠিন সময়ে অনেক অচেনা মানুষ আর পরিবারের সাথে ঘটতে থাকে অভাবনীয় ঘটনা। সবাই নতুন বন্ধনে জড়িয়ে পড়ে একে অন্যের সাথে। বইটিতে ১লা মার্চ ১৯৭১ থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির যে ধারাবাহিক চিত্র ফুটে ওঠে, পাঠককে নি:সন্দেহে তা মুগ্ধ করে।
ঢাকা শহরের এক সহজ সরল যুবক সোবাহান। থাকে তাঁর বাবাসম ছোট চাচা আনিসুর রহমানের বাসায়। রানুর সাথে নামহীন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সবকিছু হঠাৎ বদলে যায় পঁচিশে মার্চ রাতে। সেই রাতে রানুর খোঁজে বের হলেও ঘটনাচক্রে উপস্থিত হয় অচেনা এক পরিবারের মাঝে। এই অচেনা পরিবারে শুরু হয় তাঁর নতুন সম্পর্ক।
অন্যদিকে এক বাবা তাঁর মেয়েকে হারান। কিন্তু বন্ধুর মেয়ে আর সোবহানের ছোট বোন রুমকিকে বাঁচাবার কঠিন দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয়ে এক মেয়ে আর বাবার অজানা পথে কঠিন যাত্রা।
টগবগে সাহসী যুবক হাসান। যাত্রা করে যুদ্ধের জন্য। একই সময়ে পাকিস্তানের এক আর্মি অফিসার মেজবাহ ঢাকা ছাড়ে যুদ্ধে হেরে যাওয়া এলাকা আবার দখল করতে। ঘটনাক্রমে তাঁকে হাসানের মুখামুখি হতে হয়। শেষ পর্যন্ত সব ঘটনা এক বিন্দুতে এসে মিলে যায়।