ঠিক দুপুর ২টা। কমিউনিটি সেন্টারের সামনে পৌঁছেছে রাফিদ। আলুথালু বেশে, উস্কোখুস্ক চুলে। চোখ দুটো রক্তিম বর্ণের। মনে হচ্ছে কেউ তার থেকে তার প্রিয় জিনিস নিয়ে নিয়েছে। যেমনটা হয় শীতের সকাল গড়িয়ে দুপুরের সাথেই যেন সন্ধ্যা নামলে, কিছু অপ্রিয় তিক্ত অনুভূতি! ঠিক তেমন।
ত্রস্ত পায়ে কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে প্রবেশ করতেই শুনতে পেলো সবাই ‘আলহামদুলিল্লাহ্, আলহামদুলিল্লাহ’ বলছেন। এর মানে বিয়ে সম্পন্ন। রাফিদের ইচ্ছে হয়নি বর-কনের সামনে যেতে, তাই সে ফিরে যাচ্ছিল, কিন্তু হলো না, কারণ তার অফিসের কয়েকজন কর্মচারী তাকে দেখে ফেলেছিল। আসিফ এসে তাকে নিয়ে গেল স্টেজের দিকে।
বর কনের তখন আয়না দেখা পর্ব চলছিল। লম্বা ঘোমটায় থাকা কনের মুখের সামনে আয়না নিয়ে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, ‘বলো তো আয়নায় কী দেখা যায়?’
বর তখন মুচকি হাসি দিচ্ছে। কনে মুখে কুলুপ এঁটেছে। আবার জিজ্ঞেস করা হলো কনেকে। কিছুক্ষণ পর কনে ধীরেধীরে বলল,
‘আমি আমার স্বপ্নের রাজপুত্র, আমার স্বামীকে দেখি।’
এবার বরকে একবার জিজ্ঞেস করা হলো,
‘তুমি আয়নায় কী দেখো?’
একবার জিজ্ঞেস করতেই বর বলল,
‘আমি আমার আকাশের চাঁদ দেখি।’
অমনি আশেপাশের সবাই আনন্দে হৈ হৈ শুরু করে দেয়। দীর্ঘশ্বাস ফেলে কষ্টের হাসি হাসে রাফিদ। পাশ ফিরতেই যেন ভূত দেখার মতো চমকে ওঠে সে, ততক্ষণে কনের মুখের লম্বা ঘোমটাও সরেছে!