সেদিন বললাম মধ্যবিত্তদের ভালোবাসতে নেই, স্বপ্ন দেখতে নেই!
আচ্ছা, এরকম কথা কি লোকে এমনি এমনি বলে? বলে না!
সত্যি বলছি এরকম কথা লোকে এমনি এমনি বলে না।
কারণ আমি যাকে ভালোবাসতাম, সেই মেয়েটার কথাই না-হয় বলি;
কত স্বপ্ন ছিল আমায় নিয়ে তার, বুক ভরা কত আশা ছিল!
তখন আমি সবে মাত্র পড়াশোনা শেষ করেছি, বাপের টাকা নেই। চাকরির বাজার তখন ভীষণ চড়া, হয় মামা-খালু, নয়তো পয়সা! তবে আমার এ দুটোর কোনোটাই ছিল না।
সে প্রতিদিন আমায় বলত, বাসা থেকে পাত্র খুঁজছে-
তুমি কিছু একটা করো, খুব বেশি না,
অন্তত ডাল-ভাত খাবার পয়সা হলেই হলো!
আমি তখন চুপ করে থাকতাম, দূর দিগন্তে দৃষ্টি মেলে আকাশ দেখতাম।
সে কাঁধে মাথা রেখে কাঁদত! আমার ভীষণ কষ্ট হতো আমার,
আহ! সে কী কষ্ট!
সারাদিন চাকরির আশায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে আমি যখন ভীষণ ক্লান্ত,
ঠিক তখনই তার কল, দেখা করতে হবে; করতেই হবে এখনই!
আমার বুকটা বিষম কেঁপে ওঠে,
আমাদের দেখা হয়; শেষ কিংবা অন্তিম দেখা!
সে বলল, ‘মুনির! আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।’
আমি একগাল হেসে, তার কপালে চুমু খেয়ে বললাম, ‘শুভ কামনা লক্ষ্মীটা!
মেয়ে হলে নাম রেখো “চারুলতা”’।
সে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল।
এশার নামাজ পড়ে
ওই পথ দিয়ে যাওয়া তার বাবা বলল, ‘কে, কে ওখানে? কে কাঁদে?’
সে চোখ মুছে চাপা স্বরে বলল, ‘যাই’!
আজ একুশ বছর হতে চলল, তোমার সাথে আমার দেখা হয় না!