“গুলের বাদশা” বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
এক দুঃখী শহর, যে শহর সবগুলাে শহরের মধ্যে সবচে দুঃখী, এতটা ভয়াবহ রকমের দুঃখী যে সে তার নিজের নাম পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলাে, সেইখানে থাকতাে এক গল্পবলিয়ে, নাম রশিদ আর তার ছেলে হারুন। রশিদ গুলের বাদশা, খেয়ালের সাগর, আর কথার রাজা। এক্ষুনি রশিদকে বলুন গল্প। বলতে, হা কোন বস্তাপচা রদ্দিমাল পাবেন না। পাবেন প্রচুর গল্প, শয়ে শয়ে গল্প, সুখের গল্প-দুঃখের গল্প, এ দুটো একসাথে মিশিয়ে তৈরী গল্প, সাথে একটুখানি যাদু, ভালােবাসা, রাজকন্যা, কপট চাচা আর হোঁকা খালাম্মা, মােচওয়ালা চেকপ্যান্টপরা ডাকাত আর আধডজন গানের দরদভরা সুর। কিন্তু হঠাৎ একদিন সবকিছু উলট পালট হয়ে গেলাে।
রশিদকে ছেড়ে চলে গেল তার বউ। গল্প বলার জন্য মুখ খুলছেন রশিদ কিন্তু কোন গল্প বেরুলাে না৷ কেবল অস্ফুট এক “আঁক” শব্দ হলাে। গুলের বাদশা হারালেন তার গল্পের ক্ষমতা। কারণ, কারণটা তিনি অবশ্য তখনও জানেন না কোন একখানে কোনভাবে চলছে গভীর ষড়যন্ত্র। দূষিত হয়ে পড়ছে পৃথিবীর সকল গল্পের উৎস ঝরণা। খতমশােধ৷ সে নৈঃশব্দের বরপুত্র, কথার প্রতিদ্বন্দ্বী খুব ঠান্ডা মাথায় বিষ ঢালছে গল্পের সাগরে।
Haroun and the sea of Stories বা গুলের বাদশা এমনই এক দুর্দান্ত উপন্যাস। উপন্যাস এক পিতা আর তার পুত্রের। রশিদ আর হারুনের। পিতাকে উদ্ধার আর তার হারানাে প্রতিভা ফিরিয়ে দেবার জন্য সন্তানের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার গল্প। এতে আছে কিন্তুক সাহেব নামের এক অর্ধোম্মাদ বাস ড্রাইভার আর যদ্দি নামের এক লিকলিকে পানিভুত। আরাে দেখতে পাওয়া যাবে মালী নামের এক ভাসমান বাগানরক্ষী আর সারাদেহে মুখঅলা দুই বহুমুখখা মাছের। পাঠক পৌছে যাবেন অত্যাশ্চর্য গপ শহরে (যেখানে সারাক্ষণই সূর্যের আলাে) আর চুপের ভয়াবহ রাজ্যে (যেখানে সারাক্ষণই অন্ধকার)। আর সম্ভবত: সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ এতে রয়েছে এববকক: এমন বিষয় ব্যাখ্যা করা কঠিন।