দু’টি মনের স্বাধীনতা ও মুক্তির অনুভবে এ উপন্যাসের শুরু, কথপােকথনের উষ্ণতায় এগিয়ে চলে দু’টি হৃদয়ের স্বাধীনতার আকাঙ্খ, সংকটের আবর্তে গণমানুষের বিবেক সমাজতন্ত্রের চেতনায় স্বতস্ফূর্তভাবে এক হয়ে যায়। পরিণামে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ, হানাদারদের হত্যা ও ধ্বংশের মাঝে গড়ে তুলে দুর্ভেদ্য প্রতিরােধ। ২৫ মার্চ । রাত্রির শেষ প্রহর। পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর নির্বিকারভাবে গুলি চালাচ্ছে। খবর ছড়িয়ে পড়ল সারাদেশে ছাত্র-জনতা অপরিকল্পিত প্রতিরােধ গড়ে তুলছে। মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। ক্যান্টনমেন্ট এলাকা। পাক সেনাদের হাতে বাঁধন ধরা পরেছে। বন্দিশিবিরে পাক সেনারা বাঁধনকে দুষ্ট করে দিয়েছে।
পাকসেনাদের নৃশংসতা, পাশবিকতা এ উপন্যাসে এসেছে, এসেছে রাজাকার, আলবদরদের কথা, এসেছে চন্দ্রশ্রাবণীর মধুর প্রেমের স্ফুলিঙ্গ। জয়দের রেডিও অফিস আক্রমণের ব্যর্থতা।
ডিসেম্বর মাস, দেশ স্বাধীন হয়েছে। সংশয়ে আক্রান্ত আসিফ বাঁধনকে স্বামী-সন্তানের অধিকার দিতে পারছে। বাঁধনকে বীরাঙ্গনা উপাধিতে সম্মানিত করেছে দেশ… সমাজ ব্যবস্থার রূঢ় বাস্তবতায় পিতার স্নেহকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। “বাঁধন মা আমার, লােকচক্ষুর সামনে হেও প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়ে তােমার কাছে যেতে পারেনি, পরিবারের সবাই জানে তুমি মৃত, ওটাকেই সত্য ভেবাে।” সাকিব সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বিদায় মুহূর্তে বিমানবন্দরে আসিফ ও বাঁধনের সাথে কথা বলছে। হঠাৎ বাঁধন একজন ভদ্রলােককে কামড়িয়ে রক্তাক্ত করে দিল। রাজাকারদের প্রতি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। “ওদের জন্য আজ কেন আমরা দেশ ছাড়ব? কেন পরবাসী হব?”