“মেঘনাদবধ কাব্য” বইটির প্রথম অংশের লেখাঃ
মেঘনাদবধ কাব্যের কাহিনী মাইকেল মধুসূদন দত্ত রামায়ণ থেকে মেঘনাদবধ কাব্যের কাহিনী সংগ্রহ করেছিলেন। রামায়ণের প্রাসঙ্গিক কাহিনীটি এইরূপঃ
অযােধ্যার রাজা দশরথের জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্র স্ত্রী সীতা ও ছােটভাই লক্ষ্মণকে সাথে নিয়ে চৌদ্দ বছরের জন্য বনবাসে যান। বনবাসে গােদাবরী নদীর তীরে পঞ্চবটী বনে বসবাসকালে লঙ্কার রাজা রাবণের বােন শূর্পণখা বনে বেড়াতে এসে রামের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিয়ের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। রাম প্রত্যাখ্যান করে তাকে লক্ষ্মণের কাছে বিয়ের জন্য পাঠালে সেখানেও ব্যর্থ হয়। তখন শূৰ্পণখা রাগ করে সীতাকে খেয়ে ফেলতে চাইলে লক্ষ্মণ তার নাক কান কেটে তাড়িয়ে দেন। এই অপমানের কথা শূর্পণখা তার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়ােজিত দুই রাক্ষস সেনাপতি খর ও দূষণকে জানিয়ে প্রতিকার চায়। তখন রাক্ষস সেনাপতি রামকে আক্রমণ করে সসৈন্যে নিহত হয়। উদ্বিগ্ন শূর্পণখা লঙ্কায় ফিরে গিয়ে রাবণকে সব ঘটনা জানিয়ে সীতাকে হরণের জন্য উত্তেজিত করে। রাবণ ছদ্মবেশে কৌশলে সীতাকে হরণ করেন এবং লঙ্কায় এনে অশােকবনে বন্দী করে রাখেন। রাম স্ত্রীর উদ্ধারের জন্য বানররাজ সুগ্রীবের সাথে বন্ধুত্ব করে সাগরে সেতু তৈরি করে লঙ্কা আক্রমণ করেন। ভয়াবহ যুদ্ধে রাক্ষসবীরেরা একে একে রাম-লক্ষ্মণের হাতে নিহত হয়। রাবণ সবংশে নিহত হলে রাম সীতাকে উদ্ধার করেন। এই যুদ্ধের ঘটনাবলীর মধ্য থেকে রাবণপুত্র মেঘনাদের হত্যার কাহিনী নিয়ে ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য রচিত হয়েছে।