“মমি ও মাধুরী” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
পুরুষের বিশ্বে রমণীয় ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপিত নারী কি শরীর মাত্র? তার মাসংকুঞ্জে পুরুষের প্রণয়তীর্থ গড়ে উঠেছে আর তার হৃদয় রয়ে গেছে চির একা, বিচ্ছিন্ন। পরিবার কাঠামােয় কখনাে কখনাে নারীকে মনে হয় উন্মুল, অস্তিত্বহীন। জটিল মনস্তাত্বিক পীড়নের মধ্যে সে সাজিয়ে তােলে তার পান্থ নিবাস। পুরুষের জন্য নানা খণ্ডে নানা ভূমিকায় আবির্ভূত তার সেবাশ্রম। কিশােরীর মনােজগতে আলােড়ন তােলে দূরের হাওয়া, তার ছাদে নেমে আসে কুড়ি কুড়ি মেঘদল, তারপর প্রেমাস্পদের বাহুর ভেতরে হারিয়ে যায় তার সমস্ত আগামীকাল, তার মেধা, তার অনুসন্ধিৎসা। সে হয়ে ওঠে পুতুলের ঘরে ভাঁজহীন নােরা। শেলী নাজ স্পর্শ করতে চেয়েছেন নারীর দুঃখ ও দুঃখমুক্তির দ্বন্দ্ব, কিশােরীর বুকে সবুজ পাইন বনের রহস্য, গলে যাওয়া মােমের মতাে নারীর আত্মদহন। পুরুষের হাত ধরে পাড়ে উঠতে গিয়ে কুলটা নারী ওঠে অকূলে। শেলী নাজ তার কবিতায় শুনিয়েছেন সেইসব নারীর আর্তকণ্ঠস্বর । পুরুষসভ্যতা নারীকে মমি করে তােলে, বর্ষা-বসন্তে পুরুষের জন্যই মমি জাগ্রত হয় প্রেমের মাধুরীতে, সে পরিণত হয় আকারহীন কাদামাটিতে। শেলী নাজের কবিতার শরীর ছন্দময়, তার শব্দমঞ্জরি পুরুষতন্ত্রকে কেন্দ্র করে হয়ে ওঠে ঝাঁজালাে, উদগ্র ও আক্রমণাত্মক। তার প্রকাশভঙ্গি এবং বিষয়-ভাবনা স্বতন্ত্র, সাবলীল ও নতুন। ‘মমি ও মাধুরী’তে পাঠক খুঁজে পাবেন অন্য এক শেলী নাজকে।