“দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী (পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের বই)” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
সাহিত্য সমালােচকদের অনেকেরই ধারণা দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী (১৯৫২) হেমিংওয়ের শ্রেষ্ঠতম উপন্যাস। ক্ষীণতনু এ উপন্যাসটি বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে এতে প্রতিফলিত প্রতীকধর্মিতা, জীবনবােধের গভীরতা, মানুষের প্রবৃত্তি ও নিয়তির মধ্যেকার দ্বান্দ্বিক সম্বন্ধ ইত্যাদি অনুষঙ্গের হেমিংওয়ে-স্বভাবী স্বাতন্ত্রের কারণে। কিউবার এক জেলেকে নিয়ে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম সান্তিয়াগাে। বৃদ্ধ এক জেলে সে। চুরাশিটি দিন পর পর সমুদ্রে অভিযান চালিয়েছে কিন্তু একটিও মাছ পায় নি। পঁচাশিতম দিনে মাছের খোঁজে একাকী সে চলে গেছে দূর সমুদ্রে। অবশেষে গাল্ফ স্ট্রিমে বিশাল দৈত্যাকার এক মার্লিন মাছকে সে বড়শিতে আটকাতে সমর্থ হল। দুই দিন দুই রাত বৃদ্ধ জেলে একাকী দূর সমুদ্রে দৈত্যাকৃতির মাছটাকে বাগে আনতে সংগ্রাম করেছে। অবশেষে হার্পনে গেঁথে মাছটাকে নৌকার পাশে রেখে ফিরে চলতে শুরু করল সে। কিন্তু ঠিক এ রকমই এক সময়ে তার সেই বহু কাঙ্ক্ষিত পুরস্কারটাকে ছিনিয়ে নিতে দলে দলে ছুটে এল হাঙরেরা। একের পর এক হাঙরকে ধ্বংস করতে লাগল বৃদ্ধ জেলে। হালের হাতলটা না ভাঙা পর্যন্ত অব্যাহত রইল তার লড়াই। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। হাঙরগুলাে নিঃশেষ করে ফেলল। বিশালাকৃতির মার্লিন মাছটাকে; অবশিষ্ট রইল কেবল কঙ্কাল। বৃদ্ধ জেলে পরিশ্রান্ত, বিধ্বস্ত, প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় সেই কঙ্কালটাকে টেনে নিয়ে ফিরে এল তীরে; তারপর ঘুমিয়ে পড়ল নিজের ঘরে। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতে লাগল পরের দিনের। এই উপন্যাসে বুড়াে সান্তিয়াগাের আর্বিভাব ঘটেছে এক মহান জীবনােপলব্ধি নিয়ে। আর তা হল: মানুষ বুড়াে হয়ে গেলে ভাগ্যহীনতা তাকে পদানত করতে পারে কিন্তু তাহলেও সে সাহস হারায় না। মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু পরাজিত হতে পারে না কখনও।’ নিয়মকানুন মেনে চলায় থাকে অবিচল; প্রতিকূলতা তার নিত্যসঙ্গি হলেও, এমনকী প্রতিকূলতা তার অর্জনকে ধ্বংস করে ফেললেও শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করে সে।