ফ্ল্যাপে লেখা কথা
লালন ফকির বিষয়ে দু্ই বাংলায় গত চারদশকে বেরিয়েছে যত বই বা নিবন্ধ তা বিতর্ক, বিরোধ, অর্ধসত্য ও কল্পিত তথ্যে ভরা। বেশিল ভাগ বই মূল সত্যকে ধরতে পারেনি। তাই আজও ফুঠে ওঠেননি লালন তাঁর দশে ও কালের স্পষ্টতায়। লোকধর্মের স্বতন্ত্রবর্গের গবেষক সুধীর চক্রবর্তী লিখেছেন নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে লালন ও লালন পন্থা সম্পর্কে এক সর্বাঙ্গীন বই, যার লক্ষ্য লালনগানের ভিতর দিয়ে তার স্রষ্টাকে সমগ্রতায় ধরা। সেই সূত্রে তিনি ভাঙতে চান লালন প্রসঙ্গে প্রচারিত নানা অলীক তথ্য এবং সাম্প্রদায়িক বিকৃত সম্প্রচারের কৌশল।
লালন কী ছিলেন? হিন্দু না মুসলমান? নাকি জন্মপরিচয়হীন ? সেই প্রশ্ন ও সমস্যার গভীরে গিয়ে লেখক নাড়া দিয়েছেন লালনের সমকালের সমাজ- ইতিহাস, লোকায়ত ধর্ম, জনবিন্যাস, হিন্দু-মুসলমান জাতিভেদ সমস্যার আলোচনায়। এসেছে ফকিরিমতের উদ্ভব কথা, বাংলার গ্রামীণ গানের সজীব ধারা বৃত্তান্ত এবং ‘বাউল’ কনসেপ্টের প্রকৃত শিকড় সন্ধান।
এই বই তাই লালন সম্পর্কে সর্বাধুনিক তথ্য ও বিশ্লেষণবহুল শুধু নয়, লালন আলোচনার ধারাবাহিক সব বিবরণ, জাল পুঁথির সন্ধান, পূর্বমতখণ্ডন এবং নতুন দৃষ্টিকোণে নবতর সত্যের সন্ধান। বাংলা জনসমাজের ব্রাত্য অবতলের জীবনবাণী কেমন করে বাঙালি সংস্কৃতির এক দীপ্ত উদ্ভাসনকে উচ্চারণ করেছে ব্রাত্য লোকায়ত লালন তারও প্রথম প্রমাণ।