“রাখালী”বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
রাখালী
এই গায়েতে একটি মেয়ে চুলগুলি তার কালাে কালাে,
মাঝে সােনার মুখটি হাসে আঁধারেতে চাদের আলাে।
রাতে বসতে, জল আনতে, সকল কাজেই হাসি যে তার,
এই নিয়ে সে অনেক বারই মায়ের কাছে খেয়েছে মার।
সান করিয়া ভিজে চুলে কাঁখে ভরা ঘড়ার ভারে
মুখের হাসি দ্বিগুণ হােটে কোন মতেই থামতে নারে।
এই মেয়েটি এমনি ছিল যাহার সাথেই হত দেখা,
তাহার মুখেই এক নিমেষে ছড়িয়ে যেত হাসির রেখা।
মা বলিত, “বডুরে তুই, মিছে মিছি হাসিস্ বড় …
এ শুনেও সারা গা তার হাসির চোটে নড় নড়।
মুখখানি তার কাঁচা কাঁচা, না সে সােনার না সে আবীর, সে করুণ সঁঝের গাঙে আধ-আলাে রঙীন রবির।
কেমন যেন গাল দুখানি, মাঝে রাঙা ঠোটটি তাহার,
মাঠে-ফোটা কলমি ফুলে কতকটা তার খেলে বাহার।
গালটি তাহার এমন পাতল, ফুয়েই যেন যাবে উড়ে,
দুএকটি চুল এলিয়ে পড়ে মাথার সাথে রাখছে ধরে।
সঁঝ সকালে এ-ঘর ওঘর ফিরত যখন হেসে-খেলে,
মনে হত ঢেউয়ের জলে ফুলটিরে কে গেছে ফেলে!
এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে ও-পথ দিয়ে চলতে ধীরে,
ওই মেয়েটির রূপের গাঙে হারিয়ে গেল কলসটিরে।