“স্পার্টাকাস ” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
‘স্পার্টাকাস’ উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে ইতিহাসের একটি বাস্তব চরিত্র নিয়ে। তার বীরত্ব ও স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদান দেশে দেশে ও যুগে যুগে। অত্যাচারিত ও নিপীড়িত মানুষের কাছে এক উজ্জ্বল প্রেরণা হয়ে আছে। ইতিহাসে স্পার্টাকাসের আবির্ভাব খৃস্টপূর্ব ৭৩ অব্দে, একজন বিদ্রোহী গ্লাডিয়েটার হিসেবে। প্রাচীন রােমের অধিবাসীরা চিত্ত বিনােদনের জন্য এক শ্রেণীর দাসদের তৈরি করে যারা সমবেত দর্শকদের সামনে পরস্পরকে হত্যা করে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ দান করতে বাধ্য হতাে, এরাই ছিল গ্লাডিয়েটার। এই অসহ্য অবস্থার অবসানের জন্য স্পার্টাকাসের নেতৃত্বে ৭৮ জন দাস বিদ্রোহ করে বন্দীশালা থেকে পালিয়ে যায়। দুর্গম পার্বত্য এলাকায় ঘাঁটি তৈরি করে স্পার্টাকাস দেখতে দেখতে এক বিশাল দাসবাহিনী গড়ে তােলে। তার দুর্জয় সাহস, রণকৌশল ধীর বুদ্ধি ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তার তৈরি সেনাবাহিনীকে উদ্বুদ্ধ করে তােলে এবং দুর্ধর্ষ রােমক সেনাধ্যক্ষরা বার বার আক্রমণ করেও এই বাহিনীকে পরাজিত করতে পারে না। রােমের বিস্তীর্ণ এলাকায় স্পার্টাকাসের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। সেনেট বা রােমের সর্বোচ্চ শাসন-পরিষদ আতঙ্কিত হয়ে এই দাসবিদ্রোহ দমন করতে যেসব অভিজ্ঞ ও রণনিপুণ সেনানায়ক নিয়ােগ করলেন, তারাও বারবার স্পার্টাকাসের প্রতিরােধের সামনে পরাভূত হল। পরিশেষে এল দুর্ধর্ষ সেনাধ্যক্ষ মারকাস ক্রাসাস। চূড়ান্ত বর্বরতার সঙ্গে সে নিজের সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠন করে এক হিংস্র মারণযন্ত্রে পরিণত করল। ক্ৰাসাসের আক্রমণে ১২৩০০ জন দাসসৈন্য বীরের মৃত্যুবরণ করে। তথাকথিত সুসভ্য রােমের উন্নত ও রণদক্ষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বহারা শ্রেণীর যথার্থ নেতা স্পার্টাকাস সফল হতে পারেনি-অগণ্য শত্রুসৈন্যের বিরুদ্ধে শেষপর্যন্ত একাকী লড়াই চালিয়ে তার দেহ খণ্ডবিখণ্ড হয়ে রক্তাক্ত রণাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। তবু স্পার্টাকাসের’ মৃত্যু নেই, সে অমর।