ফ্ল্যাপে লিখা কথা
জহিরুল হকের এ কাব্যগ্রন্থটি প্রতিবাদ, প্রেম ও প্রকৃতির। কবি এ কাব্যগ্রন্থে বাংলা ভাষা নিয়ে কল্পনাবিলাসী হন নি, লিখেছেন বিশুদ্ধ কবিতা। কবিতাগুলো পড়ে পাঠক যেমন প্রতিবাদী হয়ে উঠবেন, তেমনি প্রেম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছোঁয়া পাবেন। আজকাল যাঁরা কবিতা রচনা করেন, তাঁদের সম্পর্কে সাধারণের অভিযোগ হেলো-ওই কবিতার অর্থ তাঁরা বুঝেন না। কোনো কোনো বেরসিক পাঠক বলেন, ‘যিনি কবিতা লেখেন, তিনিও বুঝেন কি না সন্দেহ।’ এ গ্রন্থের কবিতাগুলো সুর্বোধ্য নয়; সর্বস্ড়রের পাঠকই এর রস আস্বাদন করতে পারবেন। কবি এ কাব্যগ্রন্থে দুরূহতার ব্যাকরণ সৃষ্টি করে সাধারণদের বিমুখ করেন নি। আবার অর্থহীন শব্দ ব্যবহার কবিতাকে অখাদ্য করে তোলেন নি কিংবা তরল বাক্য-শব্দেও কবিতা রচনা করেন নি। কবিতাগুলো পড়ে পাঠকেরা আনন্দ পাবার পাশাপাশি রূপপিপাসু মন নিয়ে প্রকৃতির রূপসুধা পান করবেন। কাব্যগ্রন্থটিতে শুধু কবিতাই নেই, এর প্রতিটি পৃষ্ঠা সাজেো হয়েছে নতুন রীতিতে। যা হয়ে উঠেছে কবিতার চিত্রশিল্প। বাংলা ভাষায় এ নতুন সংযোজন। জহিরুল হক প্রচলিত কবিতার রীতি-পদ্ধতি পাল্টে দিয়ে নতুন কথা বলেছেন-নতুন রূপ ওরীতি সৃষ্টি করেছেন। যে-পথ একজন তৈরি করে গেছেন, সে পথে তিনি হাঁটতে চান নি। যে-পথে কেউ যায় নি, সে-পথেই তিনি হেঁটেছেন। অন্যের রূপ ও রীতি অনুকরণপ্রিয় বাঙালির বৈশিষ্ট্য থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন আপন বৈশিষ্ট্যে। এ কাবগ্রন্থের একটি কবিতা পড়লেই পাঠকেরা আগ্রহী হয়ে উঠবেন পরের পৃষ্ঠায় কী অছে তা জানতে। কেউই কাব্যগ্রন্থটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত না গিয়ে থামতে পারবেন না। তাঁকে এগোতেই হবে বর্ণমালার চিত্রশিল্পের আমন্ত্রণে।