“শেষ নমস্কার : শ্রীচরণেষু মাকে” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
শৈশব থেকে বেড়ে উঠছে একটি বালক, কৈশােরের সন্ধিলগ্নে সে পথ হারাল। লজ্জিত, অবগুণ্ঠিত, নিস্পাপ একটি কিশাের ক্রমশ নির্লজ্জ, বেপরােয়া, পাপ-তপ্ত হয়ে উঠেছে। ক্রমশ যাত্রা করেছে অর্থের দিকে, প্রতিপত্তির দিকে, সাফল্যের দিকে। কিন্তু অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে, সেই সফলতা যখন করায়ত্ত, তখন যাজ্ঞবল্ক্যর স্ত্রী মৈত্রেয়ীর মতাে এই মানুষটিরও মনে হয়েছে এই বৈভব, প্রতিপত্তি তার প্রার্থিত ছিল না। যাকে সে জীবনের মর্মমূল বলে এতকাল চিনে। এসেছিল—পাওয়ার পর দেখল তা নিতান্তই জীবনের খােসামাত্র—আর তখনই মধ্য বয়সে পৌঁছে যাওয়া মানুষটি কম্প্রবক্ষে ননেত্রপাতে সাম্পু প্রণতি জানাতে বসেছে ‘শ্রীচরণেষু মাকে। কারণ, অনিবার্য বিচারক যে মা ছাড়া কেউ হতে পারেন না। এই উপন্যাসে জীবন ও মৃত্যু, সাহস ও ভয়, যুদ্ধ ও পলায়ন, মিথ্যা ও সত্য, স্বীকার ও অস্বীকার, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত এই মৌলিক বিষয়গুলি প্রায় দিন ও রাত্রির অনিবার্যতায় এসেছে এবং এই বৈপরীত্যগুলির উত্তর দিতে গিয়ে লেখক নিজেও রক্তাক্ত হয়েছেন। জীবনের একেবারে মৌলিক এই স্তরগুলিকে ধরার জন্য লেখক তাই যে দুটি প্রধান চরিত্রকে হাজির করেছেন তাদের সম্পর্কসূত্রও মৌলিকতম : মা ও ছেলে। মায়ের কাছে ছেলের স্বীকারােক্তি। এই স্বীকারােক্তিতে জীবনবােধের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে বয়ে চলেছে মৃত্যুবােধও। ফলে গল্পের টান, চেনা চরিত্রের আকর্ষণের সঙ্গে সচেতন পাঠক। নিজের ভিতরে একটা চোরাস্রোতের টানও অনুভব করবেন।