“আড়কাঠি” বই এর পিছনের ফ্ল্যাপের লেখা
ভগীরথ মিশ্রের উপন্যাস ‘তস্কর’ লেখা হয়েছিল বাংলা সাহিত্যের একটি প্রায় অনাবিষ্কৃত ভূখণ্ড দিয়ে । একজন লোধা সম্প্রদায়ের মানুষ গোক্ষুর ভক্তা কীভাবে বারে বারে গ্রামীণ রাজনীতির ষড়যন্ত্রে তাঁর ‘অপরাধী’ পেশায় থাকতে বাধ্য হন, তার অনুপুঙ্খ বিবরণ ছিল এ লেখায় । ‘তস্কর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলা সাহিত্যের পড়ুয়া পাঠক ও বিদগ্ধজন তাঁকে দু হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই উপন্যাসের পটভূমিও আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামবাংলা । লেখক বসু-শবর সম্প্রদায়ের লোকজীবন নিয়ে এই লেখাটি লিখতে গিয়ে উন্মোচন করেছেন তথাকথিত ‘লোকসংস্কৃতি-প্রেমী’ ফোক্-ব্যবসায়ীদের । বিদেশিমী ক্যাথি বার্ড আর এদেশের রাজীব একই ভাবে অর্থোপার্জনের স্বার্থে ব্যবহার করে আদিবাসী বসু-শবরদের লোকজীবন, লোকনৃত্যকে । বিদেশ ভ্রমণ, সেমিনার, অনেক টাকা, সুখের জীবন, বৈভবের হাতছানি রাজীবকে পাগল করে তোলে । অসমের চা বাগানে কুলী চালান দেয়া আড়কাঠি রঙলালের দাদন থেকে বসু-শবরদের বাঁচাতে যে রাজীব একদিন লোক-সংস্কৃতি প্রচারের সংগঠন গড়ে তুলেছিল, তা আর একটি ফাঁদ হিসেবে দাঁড়ায় এই সব সরল মানুষদের সামনে । আধুনিক জীবনেরএই যন্ত্রণাময় দিকটি ভগীরথ মিশ্র উন্মোচন করেছেন তাঁর ‘আড়কাঠি’ উপন্যাসে । ভাষা ও ঘটনার গতিতে, যা পাঠকের সামনে এক সম্পূর্ণ নতুন দিগন্ত খুলে দেবে ।