W.H. Auden বলতেন, প্রত্যেক আত্মজীবনীতে দুটো চরিত্র থাকে, ইগাে এবং আত্মস্বত্বা। এ. জি. মাহমুদের গ্রন্থ ‘মাই ডেসটিনি’ শানিত অগ্নিশিখার মতাে ইগাের পাশ কাটিয়ে আশ্চর্য কৌশলে অকপট আত্ম উন্মােচনে সম্পৃক্ত থেকেছে। এটা একটা শান্ত সৌম্য মানুষের গল্প যিনি উচ্চাকাঙ্খর প্রলােভনে নয়, ভাগ্যলিপির কারনেই আসাধারন সব কাজ করেছেন। উনিশ শতকের দ্বিতিয়ার্ধে অর্বাচীন বাংলাদেশি মধ্যবিত্ত শ্রেনির কঠোর দুঃখ, দুর্দশা, যন্ত্রনার ঘটনাক্রম ধৃত হয়েছে এই আত্মজীবনী গ্রন্থে । দাঙ্গা হাঙ্গামার পরিবেশে বাস করার সময় দেশের মাটিতেই দেখেছেন তিনটে সার্বভৌম দেশের উত্থান এবং পতন। রাজনীতি বুঝেই তিনি সেই অশান্ত রাজনীতি থেকে সচেতন ভাবে নিজেকে দুরে রাখতেন। কিন্তু নিয়তির কি পরিহাস! ভাগ্যবিধাতা সেই রাজনীতির কাঠগড়াতেই দাড়। করিয়েছেন তাঁকে। বাংলাদেশে রাজনীতি ও রাজনৈতিক ভাঙাগড়ার দারুন সংকটকালে তাঁকে। বসতেই হয়েছে নানা সরকারি দপ্তরে। অতি সাবলীল ভাষায় তিনি বিবৃত করে গেছেন, কেমন। করে সাক্ষাত মৃত্যুর আক্রমন এবং সেনা উত্থানের পাল্টা আক্রমন থেকে প্রানে বেঁচে গেছেন, কেমন করে আন্তর্জাতিক বিমান ছিনতাই এর জটিল সমস্যার মােকাবেলা করেছেন এবং প্রচন্ড জাতীয়। খাদ্য সংকটে আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে কিভাবে। বাঁচিয়েছেন দেশবাসীকে । এই গ্রন্থে শুধু স্মৃতিচারন নয়, লেখক জাতীয় জীবনের সংকটময় সময়ের। ইতিহাসকেও চিত্রিত করেছেন।