দুটি গল্প নিয়ে একটি বই ‘শেয়াল ও মুরগিছানা’। গল্পের বইটি লিখেছেন নাসিরুদ্দীন তুসী। শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি উপযুক্ত বই। একটি দুটি শব্দ বানান করে পড়তে শেখা বাচ্চাদের বইটি পড়তে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। পড়ার মধ্যে যেই আনন্দ পাওয়া যায় শোনার মধ্যে সেই আনন্দ মেলে না। কেননা যখন একটি বই পড়া হয় তখন নিজের মতো করে আপন মনে পড়া যায়। পড়তে পড়তে ভাবা যায়, কল্পনা করা যায়।
শেয়ালের দুষ্টু বুদ্ধির কথা আমরা সবাই জানি। শিকার ধরার ক্ষেত্রে ওর ছলচাতুরীর শেষ নেই। কিছু পড়াশোনা করে শেয়াল নিজেকে সবার মাঝে পণ্ডিত বলে প্রচার করতে লাগল। আরো সে বলতে লাগল―‘একা শিক্ষিত হয়ে কী লাভ! শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে সবার মাঝে।’ এ কথা শুনে বনের সব পশুপাখির মন জয় করে নিল শেয়াল।
সব পশুপাখি ভাবল, তাহলে তাদের বাচ্চাদের শেয়ালের কাছে পাঠিয়ে শিক্ষিত করে তুলবে। শেয়ালও একটি গুহায় পাঠশালা খুলে বসল। হরিণছানা, খরগোশছানা, কুমিরছানাসহ আরো অনেক পশুর ছানা এসে বেশ জমিয়ে তুলল শেয়ালের পাঠশালা। বনের একপাশে বন-মুরগির বাসা। তার রয়েছে কয়েকটি ছানা। মুরগি ভাবল, যাই ছানাদের ভর্তি করে দিয়ে আসি শেয়ালের পাঠশালায়। কিন্তু এ কথা মোরগ জেনে মুরগিকে নিষেধ করল।
আর মোরগের নিষেধ না শোনায় ঘটল অঘটন!
‘হরিণছানা, হাতি ও হাঁসবন্ধু’ গল্পে একটি হরিণছানার বিপদে অন্য পশুরা কীভাবে এগিয়ে এসে বিপদ থেকে উদ্ধার করল সেই গল্প রয়েছে এ বইয়ে। চমৎকার ঝকঝকে সব ছবির সাথে এ গল্পগুলো সাজানো হয়েছে। ছবি দেখা এবং গল্প পড়ার যে আনন্দ তা পুরোটাই পাওয়া যাবে বইটি সংগ্রহ করে।
শিশু-কিশোরদের মেধা ও বুদ্ধির চর্চা করাতে হলে তাদের বেশি বেশি কল্পনাশক্তি বাড়াতে হবে। এতে তারা হয়ে উঠবে সৃজনশীল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার বিকল্প নেই। গল্পগুলো পাঠের পরে তাদেরকে গল্পটি সম্পর্কে বলতে বলা কিংবা এ রকম একটি গল্প লেখার প্রতি অভিভাবকদের উৎসাহিত করা উচিত। এতে তার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিটি শিক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ, যদি সেই শিক্ষাকে কাজে লাগানো যায়। স্কুল আর পাঠ্য বইয়ের বাইরে যেই বই পড়তে ইচ্ছে করে সেই বইয়ের তালিকায় এ বইটিও রাখা যাবে।