মাহমুদুল হক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান লেখক।বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে যে কজন কথাশিল্পী নির্মোহ ও আড়ালপ্রিয় জীবনযাপন করেছেন,মাহমুদুল হক তাদের অন্যতম।১৯৭২ সালে জীবন আমার বোন প্রকাশিত হওয়ার পরই দীক্ষিত পাঠক-সমলোচক মহলে বইটি সমাদৃত হয়।এরপর খেলাঘর (১৯৭৮),মাটির জাহাজ (১৯৭৯),অশরীরী (১৯৭৯),কালো বরফ (১৯৯২),পাতালপুরী (২০০৯) ও নিরাপদ তন্দ্রা(২০১০) প্রতিটি উপন্যাসে বিষয় ভাবনা ও শিল্পকাঠামোর নান্দনিক রূপের বহুমাত্রিক প্রকাশ ঘটেছে।সাতচল্লিসের দেশভাগ ,ষাটের দশকের ঔপনিবেষক কাল,মুক্তিযুদ্ধ,সামরিক শাসন ও তার পরবর্তী বাঙালী জীবনের অনুসঙ্গ তার উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে স্বতন্ত্র মেজাজের রঙে।তিনি জীবনকে সুক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং নিবিড় আন্তরিকতায় নি:সঙ্গ মানব-মানবীকে চিত্রিত করেছেন।সামগ্রিক মানবপ্রেমের জয়গাঁথা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মুখোশ উন্মোচন করেছেন দৃঢ় সাহসিকতার সঙ্গে।জীবনের গভীর থেকে গভীরতর স্তরে জীবনকে পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও বিভিন্নরূপে বিশ্লেষণ করেছেন।মুখের অন্তরালে মানুষের মুখোশটাকে বাস্তব জীবনের উপন্যাসে স্থান দিয়েছেন।উপন্যাসের ক্ষেত্রভূমিতে নির্মাণ করেছেন নিজস্ব শিল্পভুবন।