“মানুষ তার জীবনে বার বার কান পেতে শুনতে চায় বৃষ্টি পতনের শব্দ। বৃষ্টি পড়ে প্রকৃতিতে, বৃষ্টি পড়ে মনের মাটিতেও। ভাবনা কত সময় জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে মেলে না। কোথায় মেঘ গর্জন করে, আর কোথায় সে বর্ষায়। যেমন অংশু ভেবেছিলেন এক, ঘটে গেল যেন অন্য কিছু। কারণ অভির বড় হওয়া, তার শিক্ষা-দীক্ষা, অপালার মতো মেয়েকে জীবনসঙ্গী পাওয়া, তার বিদেশযাত্রা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার ভিতর কেমন করে যেন বাসা বেঁধেছিল শুধুই স্বার্থপরতা। যার যেখানে ঠিকানা—সে তার নির্দিষ্ট আশ্রয়ে পৌঁছতে চায়। যেমন অবনী তার নিজের জীবনছন্দে নিশাকে বাঁধতে চায়নি, তেমনি অরূপও নিশার তালে পা মেলাতে পারে না। কোথাকার মেঘ কোথায় বর্ষায়। আমেরিকার বাকেলো শহরে নিশা তার মনের মানুষ রফিককে খুঁজে পায়। মিলে যায় তার জীবনের প্রকৃত ঠিকানা। একই রকম জীবন জটিলতার কাহিনী এসে মেশে চারজন এবং একজন-এর বৃত্তে। মমতার যন্ত্রণা অন্য তিন বান্ধবীর থেকে পৃথক। আবার দীপ্তির কষ্ট মমতার যন্ত্রণার ভিন্ন এক রূপ। এরই মাঝে অচিনের মনস্তত্ত্বও অদ্ভুত। আবার মানুষ নিজেকে কখনও ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী রূপে কল্পনা করে। ভগবানের বিরুদ্ধে অভির কোনও জেহাদ নেই, বরং ভগবান তার প্রতিপক্ষ। কৃষ্ণসেবিকা অনসূয়াকে স্পর্শ করেই অভি হয়ে উঠল ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী। এভাবেই কত ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এগিয়ে চলে কাহিনীমালা, এগিয়ে চলে জীবন। লেখকের দরদী কলমে উঠে আসে এক একটি চরিত্রের মানবিক মহিমার প্রকৃত স্বরূপ।”