“কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার” বইয়ের ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দের জার্মান সংস্করণের ভূমিকাঃ
বর্তমান সংস্করণের ভূমিকা হায় আমাকে একাই স্বাক্ষর করতে হবে। ইউরােপ ও আমেরিকার সমগ্র শ্রমিক শ্রেণী যাঁর কাছে সবচাইতে বেশি ঋণী সেই মার্কস হাইগেট সমাধি-ভূমিতে শান্তি লাভ করেছেন। তাঁর সমাধির উপর ইতােমধ্যেই প্রথম তুণরাজি মাথা তুলেছে। তাঁর মৃত্যুর পর ‘ইশতেহার’-এ সংশােধন বা সংযােজন আরাে অভাবনীয়। তাই এখানে স্পষ্টভাবে নিম্নলিখিত কথাগুলি আবার বলা আমি প্রয়ােজন মনে করি ।
‘ইশতেহার’-এর ভিতরে যে মূলচিন্তা প্রবাহমান তা হল এই ঃ ইতিহাসের প্রতি যুগে অর্থনৈতিক উৎপাদন এবং যে সমাজ-সংগঠন তা থেকে আবশ্যিকভাবে গড়ে ওঠে তা-ই থাকে সে যুগের রাজনৈতিক ও মানসিক ইতিহাসের মূলে, সুতরাং (জমির আদিম যৌথ মালিকানার অবসানের পর থেকে) সমগ্র ইতিহাস হয়ে এসেছে শ্রেণী-সংগ্রামের ইতিহাস, সামাজিক বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়ের শােষিত ও শােষক, অধীনস্থ ও অধিপতি শ্রেণীর সংগ্রামের ইতিহাস ; কিন্তু এই লড়াই আজ এমন পর্যায়ে এসে পৌছেছে যে শশাষিত ও নিপীড়িত শ্রেণী (প্রলেতারিয়েত) নিজেকে শােষক ও নিপীড়ক শ্রেণীর (বুর্জোয়া) কবল থেকে উদ্ধার করতে গেলে সেইসঙ্গে গােটা সমাজকে শােষণ, নিপীড়ন ও শ্রেণী-সংগ্রাম থেকে চিরদিনের মতাে মুক্তি না দিয়ে পারে না -এই মূলচিন্তাটি পুরােপুরি ও একমাত্র মার্কসেরই চিন্তা।
*এ কথা আমি বহুবার বলেছি। কিন্তু ঠিক আজকেই এ বক্তব্য ‘ইশতেহার’-এর পুরােভাগেও রাখা প্রয়ােজন।