“গালিব পত্রাবলী” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
“যখন তিনি থাকবেন না তখনাে মেয়েরা অষ্টাদশী হবে। এই কথা ভেবে গালিব খুব কষ্ট পেয়েছিলেন, এবং তিনি স্বর্গে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন এই অজুহাতে-যে সেখানে কোনাে যুবতী হুরী নেই, সকলেরই বয়স হাজার বছর।”—এভাবেই গালিবকে স্মরণ করেছিলেন ওপার বাংলার প্রখ্যাত কবি আবু হেনা মােস্তাফা কামাল। আপামর বাঙালি বহুযুগ ধরে মজে থেকেছে গালিবের গজলে। তাদের প্রেম-বিরহের সাতকাহনে মিশে গেছে গালিবের শায়েরি। কেমন ছিলেন এই গালিব মানুষটি? চেনা অনুভবের ঢেউগুলি। কেমনভাবে তার মধ্যে আগন্তুক চরাচরকে জাগিয়ে তুলত?—সেসব খুঁজে ফেরার পাথেয় হিসেবে এখানে সংকলিত হল গালিবের পত্রাবলি। তার ব্যক্তিগত জীবনের ছোঁয়া ধরা থাকল এইসব পত্রে অনুবাদের সহজ সাবলীল ভাষায়। চিঠি গালিবের জীবন থেকে একাকিত্বকে হরণ করে নিত। তিনি প্রতীক্ষা করে থাকতেন চিঠির জন্য। তাই তাে সেকালের শক্তিশালী কবি ও তাঁর প্রিয় শিষ্য মুনশি হরগােপাল তাকে তিনি একবার লিখেছিলেন—“আমি এই একাকিত্বে শুধু চিঠির ভরসা নিয়ে বেঁচে আছি। অর্থাৎ যার চিঠি এল ধরে নিলাম সে নিজেই এল।” এভাবেই বড়াে ব্যক্তিগত কথনের রীতিতে আসলে উনিশ শতকের প্রথম ছয় দশকের বহু ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের মননচর্চার এক ইতিহাস ধরা থাকল এইসব পত্রে ও প্রত্যুত্তরে।