নগুগির কেঁদো না, বাছা উপন্যাসে উপ্নিবেশী আইনি লুন্ঠনের নগ্ন ছবি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে উনিশ শতকের নীলকরদের নির্যাতন ও শোষণের ভয়াবহ কাহিনী আমাদের জানা আছে, অরণ্যবাসী সাঁওতাল মুন্ডা ইত্যাদি আদিবাসীদের অরণ্যচ্যুত জীবিকাচ্যুত করার দীর্ঘ নির্মম বৃত্তান্ত এবং তাঁর প্রতিরোধের ইতিহাসও আমাদের জানা- এসব সহজেই মিলিয়ে নেয়া যায় কেনিয়ার ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে। ঐ বিরাট দেশের অরণ্যভূলি, সমস্ত আবাদযোগ্য জমি শ্বেতদ্বীপবাসী শাদা চামড়ার সাহেবদের করতলগত হয়েছিল।…
এই উপন্যাস মাউ মাউ মুক্তিসংগ্রামের উগ্র মরিয়া মহৎ যে চিত্র আমাদের সামনে উন্মোচিত করে তা যেন সমগ্র পৃথিবীর অধিকারহারা পরাধীন নির্বাসিত মানুষের অবিরাম সংগ্রামেরই চিত্র, অন্যদিকে এই বিশাল রাজনৈতিক আধারের মধ্যে সাধারণ, অতিসাধারণ কেনীয় কৃষক, মজুর- তাঁর পরিবারের নারী শিশু বৃদ্ধ যুবক যুবতী এক-একটি ব্যক্তির আশা হতাশা আকাঙ্ক্ষা, বাসনার ছবি-টলটলে জলে রোদ পড়লে নুড়ি-পাথরের মতো স্পষ্ট ঝরঝরে- এই দুটি মুখকে একসাথে জুড়ে নগুগি তাঁর উপন্যাসে এমন সমগ্রতা তৈরি করেছেন যাতে কোনো অনুপুঙ্খ বাদ পড়েনি।