আবুল খায়ের লঞ্চে ঘুমাচ্ছেন। স্বপ্নে আলো এসে তাঁর ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করছে। তাঁর কপালে হাত রেখে বেশ কয়েকবার ডাকছে। তবুও যখন তাঁর ঘুম ভাঙছে না ঠিক তখনই আলো আবুল খায়েরের কপালে চুমু খেয়ে আবার ডাকতে শুরু করল, ‘বাপজান, অই বাপজান ওঠো না! মায় তোমার লাইগ্যা খাওন বাড়ছে! খাইবা না বাপজান! আমারে নলা দিয়া খাওয়াইবা না বাপজান! খিদা লাগছে তো, ওঠো না!’ আবুল খায়ের স্বপ্নে ঘুম থেকে উঠলেন। স্বপ্নেই বাড়িতে এসে হাত-মুখ ধুয়ে খাবার সামনে নিয়ে বসলেন। খুব যত্ন নিয়ে মাছের সাথে ভাত মাখতে লাগলেন। তারপর আলোর মুখে নলা তুলে দিলেন। আলো খুব আয়েশ করে খেতে খেতে বলল, ‘বাপজান, তুমি খাইবা না!’ স্বপ্নে তো আলো এসেছে ঠিকই, বাপজান বলেও ডেকেছে। কিন্তু বাস্তবে কি আলো এসেছে! বাপজান বলে ডেকেছে! তাঁর কপালে চুমু খেয়ে তাঁর ঘুম ভাঙিয়েছে! নাকি আলো, বাপজান বলে আলোর ডাক, কপালে আলোর চুমু খাওয়া সবই বিভ্রম! এই বিভ্রমের ভেতরই কি অবরুদ্ধ হয়ে আছে মতিন! নাকি মতিনের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে আছে বিভ্রম! এই বিভ্রম আর মতিন, মতিন আর বিভ্রম থেকেই খোলাসা হলো অন্যরকম এক জগতের। যে জগতের নাম ‘রোকসানা।’