“অষ্ট অম্বর” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
দবীর সাহেব খুব বেছে বেছে সাদা গােলাপের কলির একটা তােড়া বানিয়ে বাড়ি ফিরল, রাহেলার সাদা গােলাপ ভীষণ পছন্দ, পরম যত্নে শােবার ঘরের ফুলদানীতে ফুলগুলাে সাজালাে, আজও রাহেলার মন খারাপ হলাে, প্রতিবছর মানুষটা এইদিনে তার জন্য ফুল নিয়ে আসে, অথচ বিবাহ বার্ষিকীর কথা একবারও রাহেলার মনে থাকে না, কেন যে এমন হয়? নিজের উপর ভীষণ রাগ লাগে রাহেলার। ইদানীং নীতুর বেশিরভাগ সময় কাটে ছাদে তার একান্ত জায়গাটTয়। তার একজনের জন্য ভীষণ মন কাঁদে, তিনি হলেন মাজেদা বেগম। কিন্তু কিছু সম্পর্ককে ইচ্ছে থাকা সত্বেও দূরে সরিয়ে দিতে হয়, তেমনই একটা সম্পর্ক নীতু আর মাজেদা বেগমের। আজকাল রেহাল আয়ােজন করে জ্যোছনা রাতে শীতলপাটি পেতে ছাদে হা করে শুয়ে থাকে। তার পাশে থাকে ছােট্ট আকলিমা, পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া কোন এর মায়াবতীর এই অভ্যাসটা ছড়িয়ে পরেছে এই পরিবারের বেশ ক’জনের মধ্যে। রুকু প্রায়ই স্বপ্ন দেখে সে লাল বেনারসী পরে বউ সেজে নৌকা করে শশুরবাড়ী যাচ্ছে, কিন্তু পুরা নৌকায় রুকু ছাড়া আর কেউ নেই সে হাউমাউ করে কেঁদেই যাচ্ছে, আর কাঁদতে কাঁদতে ঘুম থেকে উঠে পরে, সে জানে এই জীবনে তার কখনই বউ সাজা হবে না। তাই হয়ত স্বপ্নও মজা করে। আফরিনের দীর্ঘশ্বাস মাঝেমাঝে সৈকতকে ভাবায়, হঠাৎ হঠাৎ নিজের গয়নাগুলাে হারিয়ে আফরিন কী যেন বিড়বিড় করে। প্রায়ই উজালাকে নিয়ে বাইরে গেলে পৃথাকে কেউ না কেউ জিজ্ঞেস করে ইমরান আর পৃথার কারােই তাে কোকরা চুল কিংবা চোখের মনি বাদামী না উজালা কারটা পেয়েছে? পৃথা মাঝেমাঝে জবাব দেয় আবার কখনও উদাস হয়ে যায় । সাহিল যখন সিফাতকে মামনি বলে ডাকে সিফাতের অন্য একটা বাবুর কথা মনে পড়ে, বাবুটা ঝাপসা, কে এই বাবু? সিফাতের মাথা ধরে যায় বেশি চিন্তা করলে, অস্থির লাগে। রােদেলা কখনও জানতে পারলাে না তার প্রথম ভালােবাসার মানুষটা অবশ্যই ভুল ছিল না, সেও পাগলের মতাে ভালােবাসত তাকে। মাঝে মাঝে পাগলের মতাে ভালােবাসার মানুষগুলই পৃথিবীর দুই প্রান্ত থেকে একে-অপরকে ভলােবেসে যাবে সারাটা জীবন।