হাজারো কল্প-পৃথিবী সৃজনের ক্ষমতা যে মানুষের আছে বাস্তবে তার জন্য পৃথিবী এই একটাই। এ পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোথাও আবাস গড়ার বা পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার বেদনাময় তাগিদ মানুষ আজন্ম বয়ে বেড়ায় এবং নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে এমন ভাবনাও মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। পৃথিবীই বা ব্যক্তি মানুষের ক’দিনের আবাস? এক এক করে চলে গিয়ে সেই শূন্যতায় লীন হয় যেখানে থেকে সে অঙ্কুরিত হয়ে এখানে এসেছিল। এই পৃথিবী থেকে মানুষ বড়জোর তার প্রথম স্বগোত্রীয়জন পর্যন্ত ফিরে তাকাতে পারে। এই সীমিত পরিসীমায় ও মানব বসবাসের অবিস্মৃতি জুড়ে রয়েছে আশা, অবিচার, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ, দায়িত্ব, উৎকণ্ঠা এবং হাজারো প্রতিবন্ধকতার ভাবনা। সব মিলিয়ে আলোর চেয়ে আধিক্যে বিরাজমান যে অন্ধকার মানুষ তার মুখোমুখি হয় প্রতিনিয়ত। এই অন্ধকারেই আবার মাঝে মাঝে আশ্রয় খুঁজে নিতে চায়। অপ্রতিদ্বন্দ্বী অন্ধকারে, আলো-আঁধারি খেলায় মানুষের ভেতরে বয়ে যাওয়া অনুভবের সামগ্রিক যে স্রোত মানুষের পৃথিবীতে তাকে হৃদয়ঙ্গম করার মধ্য দিয়েই সামনে চলে আসে ‘চোখের ভেতর যে নদী’।