প্রাসাদজুড়ে শােনা যেতে লাগল সিংহের গর্জন। তৈলচিত্রের সিংহী যেন জ্যান্ত হয়ে অমনি ঝাঁপিয়ে পড়বে ওদের ওপর। ভয়ে কেঁপে উঠল ওরা সবাই। হুড়মুড় করে ওরা নেমে এলাে বারান্দার ওপর। পড়িমরি করে ছুটে পাঁচিল ঘেরা প্রাসাদের গেট দিয়ে ওরা বেরিয়ে এলাে। দেখতে পেল, গেটের সিংহ দুটিও যেন জ্যান্ত হয়ে উঠেছে। ওদের চোখ দিয়ে সার্চ লাইটের মত আলাে। ঠিকরাচ্ছে। কখনাে লাল আলাে, কখনাে সবুজ। রহস্যময় এই আলাের দ্যুতি, সিংহের পিলে-চমকানাে গর্জন আর ভুতুড়ে এই প্রাসাদ থেকে যতদূরে থাকা যায় ততই ভাল। ওরা একছুটে ঝােপঝাড় ফুড়ে খেলার মাঠে ফিরে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। দলের একটি ছেলে কিন্তু ওদের সাথে ফিরে যায়নি। ছেলেটির নাম আরমান। বয়স এগার। আরমান মন্ত্রমুগ্ধের মত দাঁড়িয়ে রয়েছে বারান্দায়। দরজার সামনে। দরজার ওপরে তৈলচিত্রের সিংহের জ্বলন্ত চোখের ওপর তার চোখ। তখনাে সিংহ গর্জন করে চলেছে। এতটুকু ভয় নেই আরমানের। যেন মুগ্ধ হয়ে সিংহের চোখে চোখ রেখে সে কোনাে গান শুনছে। তার বন্ধু সবাই ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছে, সেদিকে খেয়াল নেই তার। এই পরিবেশ আর এই গর্জন তার ভাল লাগছে, এমন এক ভঙ্গি নিয়ে সে দাড়িয়ে রয়েছে। সন্ধ্যা নামছে। নিভে আসছে দিনের আলাে। ঘাপটি মেরে নেমে আসছে অন্ধকার।