“মঙ্গলবারের জন্য অপেক্ষা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
ইফতেখারের বাবা রেজা খান ছিলেন ব্রিটিশ আমলের বিপ্লবী। দেশভাগের পর নিভৃত এক গ্রামে নিজের চেষ্টায় গড়ে তােলেন একটা হাইস্কুল। তার ছেলে হয়ে ইফতেখার হয়ে উঠেছিলেন ছাপােষা মানুষ। জীবনের সবখানে তাকে করতে হয়েছে আপস। চেনাপথের গণ্ডির বাইরে যেতে পারেননি কোনােদিন। নিজের বাড়িতে আশ্রিতা স্ত্রীর বান্ধবী মনাকে পেয়ে শুরু হয়ে যায় তার অন্যজীবন। সেই জীবনের জন্য পরে বিরাট মাশুল দিতে হয়। ভেঙে যায় সংসার। বিচ্ছেদ না হলেও আলাদা থাকতে শুরু করে স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা। এদিকে মনার ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরিণামে মৃত্যু। একা হয়ে যান ইফতেখার। অন্যদিকে অবসর জীবনে গিয়ে আর করার মতােও কিছু ছিল না। ঠিক সেই সময় হাজির হয় তােজো। তার ভেতরে তিনি খুঁজে পেলেন নিজের ছােটবেলার কিশােরটিকে। কিন্তু তােজো তার সমস্ত ধারণা, ভাবনাকে চুরমার করে দেয়। তায়রিনকে উত্ত্যক্ত করা বখাটেদের সঙ্গে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সে। বিচার বসে মহল্লায়। ঠিক তখন হাজির হয় দোলন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিষিদ্ধঘােষিত চরমপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই দোলনই নাকি তায়রিনের স্বামী! সশস্ত্র একদল সহযােগীর সঙ্গে তায়রিনকে নিয়ে রওনা হয় সে।
কদিন পর তােজোর মৃত্যু হয় এয়ারপাের্ট রােডে, সঙ্গে ছিল এক মন্ত্রীর মেয়ে। দোলনের লাশ ভেসে ওঠে নদীতে। তায়রিন আবার ফিরে আসে ঢাকায়। সাদিদকে দিয়ে শুরু হয় তার জীবনের নতুন এক পর্ব। আর বাবার ডায়েরির পাতায় পাতায় ইফতেখার আবিষ্কার করেন অন্য আরেক পিতাকে, আদর্শবাদী মানুষটির ছিল কত না দ্বিধাদ্বন্দ্ব আর সত্তার সঙ্গে নিত্য দ্বৈরথের দিনযাপন।