পিতৃমাতৃহীন অনাথ বালিকা জেন আয়ার। শৈশবেই তার মামা এই এতিম বালিকাকে তুলে আনেন তার আশ্রয়ে। মামার মৃত্যুর পর মামির সংসারে অবহেলা আর অনাদরে বেড়ে উঠতে থাকে সে। এক সময় জেনের মামির পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারের মাত্রা চরমে উঠলে স্থানীয় একজন ডাক্তার তাকে পাহাড়ি এলাকার একটা অনাথ আশ্রমের স্কুলে ভর্তি করে দেন। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ছিল খুবই কৃপণ ও কড়া স্বভাবের মানুষ। বিদ্যালয়ের এতিম বালিকাদের প্রয়ােজনীয় খাবার ও কাপড়-চোপড় দিতে কৃপণতা করতেন তিনি। প্রায় অবহেলিত এই বিদ্যালয়ে এক সময় টাইফাস রােগ ছড়িয়ে পড়ে। অর্ধেকেরও বেশি বালিকা মারা যায় এই ভয়াবহ রােগের প্রকোপে। জেনের প্রাণপ্রিয় বান্ধবীটিও একই শয্যায় জেনের পাশে মারা যায় । জেন পরবর্তীতে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নিযুক্ত হয় এবং এখান থেকে সরে অন্য কোথাও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। পরবর্তীতে জেন থর্নফিল্ড হল নামের একটি বাড়িতে একটি ছােটো বালিকার গৃহশিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হয়। সেখানেই তার পরিচয় ঘটে থর্নফিল্ড হলের মালিক যুবক মি. রচেস্টারের সাথে। রচেস্টারের প্রতি তার সুপ্ত ভালােবাসা জেগে ওঠে। মি. রচেস্টারও তার প্রতি আকৃষ্ট হন এবং বিয়ের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু রচেস্টার ছিল বিবাহিত, তার উন্মাদ স্ত্রী থর্নফিল্ড হলেরই একটি গােপন কক্ষে বন্দি ছিল। তাকে ঘিরে থর্নফিল্ড হলে নানা রকম ভৌতিক ও পৈশাচিক কাণ্ড চলতে থাকে। সামাজিক বাধার মুখােমুখি হন রচেস্টার। জেনকে বিবাহ করার মানসে গির্জায় নিয়ে যাবার পর ভেঙে যায় বিয়ে। মানসিকভাবে জেন বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও মনােবল হারায় না সে। থর্নফিল্ডের নিকট থেকে সরে গিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয় সে। সেখানেও নানা ঘাতপ্রতিঘাতের মুখােমুখি হয়ে আবার সে ফিরে আসে রচেস্টারের কাছে। নানাবিধ ঘাত, প্রতিঘাত, দ্বন্দ্ব সংঘাত ও অম্লমধুর ভালােবাসায় জারিত এই উপন্যাস।