মুমিন যদি মুমিনের আয়না হয়, তাহলে মিম্বর হবে সমাজের আয়না। সোনালি যুগের মিম্বরগুলো তেমনই ছিল। আজও মসজিদকে সমাজের সেমিনার কক্ষও ধরা গেলে মিম্বরই ঠিক করে দিতো সমাজের গতি-প্রগতি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেটা হয় নি। তাই আমাদের হৃদয় মদিনার মসজিদে রাসুল (সা.) এর খুতবার দৃশ্য এবং মক্কায় আরাফার ময়দানে কিংবা বাইতুল্লাহ ঘিরে সাহাবিদের জলসার দিকে ছুটে যায়। আমরা প্রায়ই ভাবী, সেখান থেকে আজও কোনো শাশ্বত বার্তা আসে কি না। কিন্তু ভাষার প্রাচীর থাকায় মক্কা-মদিনার নির্দেশনা আমাদের জানা হয় না। ‘মক্কা-মদিনার খুতবা’ বইটি সেই সমস্যা দূর করে সমকালে মক্কা-মদিনার ইমামদের বার্তা আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরেছে। সমাজের আয়নার মতো প্রতিটি সংকট, হোক তা পরিবার কিংবা রাষ্ট্রের, হোক তা ব্যক্তিক কিংবা নৈর্ব্যক্তিক, কোনো কিছুই হারামাইনের ইমামদের নজর এড়ায় নি। হারামাইনের ইমামরা ফেইসবুক এবং টোটাল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিয়ে মুসলিম জীবনে বিনোদনের প্রয়োজনীয়তাও ব্যাখ্যা করেছেন। এমনকি পারিবারিক সহিংসতার স্বরূপও তুলে ধরেছেন, বাতলে দিয়েছেন প্রতিকারও। পড়তে পড়তে মনে হবে, এই হলো, নবীর ওয়ারিশদের বুকের আওয়াজ। বিষয় সন্নিবেশ দারুণ, অভিনব ও আধুনিক এবং আলোচনার ভেতরপাঠে আয়াত-হাদিস-যুক্তি-দরদের মিশেল দারুণ সাজুয্যময়। বিশেষ করে এদেশের খতিবদের এ গ্রন্থটি পাঠ করা উচিত। গত এক বছরে (১৪৩৮ হিজরি) মক্কার বাইতুল্লাহ ও মদিনার মসজিদে নববিতে ১৮ জন ইমামের প্রদত্ত ৬৬টি খুতবা সংকলিত হয়েছে এ গ্রন্থে। মলাটের নকশা, মুদ্রণের কৌশল ও বাঁধাইয়ের চমৎকারিত্বে রয়েছে আভিজাত্য।