নিভু নিভু জীবনেও বসন্ত আসবে- জানিয়ে গেছে দখিনা বাতাস, তাইতাে জন্মলগ্ন থেকে নিস্তব্ধ নিশ্বাসে মানুষ-আত্মার বারান্দায় দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকে চন্দ্রভূক জানালার দিকে, আলাে আসবে। গৃহে প্রবেশের জন্য যেমন দরজা তেমনি মনের ঘরে সুখকণিকা প্রবেশের জন্য প্রয়ােজন- জানালা। এই অনুচ্চারিত কথামলায় সম্পূর্ণ প্রতীকী নির্ভর কাব্যগ্রন্থ ‘বসন্তের জানালা’। গভীর অভিনিবেশ সহকারে পাঠ করলেই অনুভব করা যায় কবির শব্দ বুননের অসাধারণ দক্ষতা। কবি অনুভূতির সুঁই দিয়ে আবেগের সুতােয়- কষ্ট, বিরহ, আনন্দের ফুলে গেঁথেছেন দোদুল্যমান জীবনের কাব্যকথা। উপমা, উৎপ্রেক্ষা, অলংকার ও মিথের নান্দনিক প্রয়ােগে কবি তার কবিতার জমিনে করেছেন বােধের আবাদ। কাব্যগ্রন্থটিতে নিপুণ বিনির্মাণের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন- অভিজ্ঞতার ডালি। বলতে চেয়েছেন- আত্মার সাথে আত্মার মিলনে খুলে যায় বসন্তের চিরস্থায়ী জানালা। অন্যথায় দুঃস্বপ্নের নদীতে ঝাঁপ দেয়- যৌবন আর মৃত্যুর মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকে সুখ। আলােকোজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে পাঠক হৃদয়ে কবিতার আলাে ছড়াতেই যেন কবি রুহুল আমিন রােদুরের আবির্ভাব। অনুভূতির তুলি দিয়ে কবিতার শরীরে আত্মার প্রেমের যে অমৃতচিত্র কাব্যের নির্মাণশৈলীতে এঁকেছেন তা পাঠক হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন দখল করবে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।