“পাগলা ডাক্তারের বিচ্ছুবাহিনী” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
রবিন এবং সেতু একসঙ্গে দৌড়ে আসে গাঁয়ের প্রাইমারি স্কুল মাঠে। কদিন হলাে সেখানে যুদ্ধের ট্রেনিং চলছে। ওরা নিজেরাও ট্রেনিং অংশ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা ছােট বলে ওদের ট্রেনিংয়ে। নেয়নি। তাতে দুজনের ভীষণ আফসােস, কেন আমরা এইসময় বড় হলাম না।’ ওরা দৌড়ে এসে মাঠের পশ্চিম পাশে সড়কের কাছে উঁচু ভিটায় বসে মুক্তিযােদ্ধাদের ট্রেনিং দেখে। স্কুল মাঠে জনা পঞ্চাশেক মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ট্রেনিং দিচ্ছে। দেশীয় অস্ত্র বলতে বল্লম, লাঠি, সড়কি, বর্শা, হলঙ্গা। একজন বয়স্ক ব্যক্তি তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তার সাদা ধবধবে বাবড়ি চুল সহজে তাকে আলাদা করা যায়। একসময় তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। এখন অবসরে আছেন। তিনি সবাইকে যুদ্ধের ট্রেনিং দিচ্ছেন। মাঠের চারদিকে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে-বসে তামাশা দেখছে। নানা বয়সী নানা পেশার মানুষ এই প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক সবাই লুঙ্গিতে মালকোছা মেরে নানা ভঙ্গিমায় বিভিন্ন। পজিশনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কখনাে শুয়ে, কখনাে। হাঁটু ভেঙে বসে, কখনাে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে। কখনাে মাটিতে শুয়ে গুই সাপের মতাে গা মােচড়িয়ে হাত-পা ঠেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। কখনাে লাঠিকে রাইফেলের মতাে ধরে ঘা দেওয়ার। মতাে করে সামনে ঘা দিচ্ছে। আর গলা মিলিয়ে জয়বাংলা বলে চেঁচিয়ে উঠছে।