স্যার,
পুরোনো দিনের একটি চিঠিতে স্ত্রী তার কলিকাতাবাসী হাজব্যান্ডকে সম্বোধন করছে ‘ওগো পূজনীয় পতিধন’, আর ইতিতে লিখছে ‘আপনার পদতলে আশ্রিতা’। এসব লিখতে আমার বয়েই গেছে!
আমি এ ধরনের চিঠি লিখি না। আপনি যত বড়ো বাহাদুরই হোন না কেন—পূজনীয়, পতিধন—এজাতীয় শব্দ আমার পক্ষে ব্যবহার করা অসম্ভব, আর পদতলে আশ্রিতা তো নয়ই। আপনি যদি এ ধরনের চিঠি আমার কাছ থেকে আশা করেন, তাহলে লিখে রাখতে পারেন, আপনার সে আশায় গুড়ে বালি। গুড়ে বালি যে একটা বাগধারা আর এর মানে যে হতাশ হওয়া, এটাও কিন্তু আপনিই শিখিয়েছেন।
কেমন দিলাম স্যার?
একেই বলে গুরুমারা বিদ্যা।
বাংলা সেকেন্ড পেপারে ভালো নম্বর তোলার জন্য কীভাবে চিঠি লিখতে হয় আমার বেশ জানা আছে। প্রাপকের ঠিকানা, প্রেরকের ঠিকানা, তারিখ, উপযুক্ত সম্বোধন, শ্রেণিমতো সকলের জন্য সালাম, কদমবুসি ও স্নেহ প্রেরণ, কুশল জিজ্ঞাসা, তারপর মূল বিষয়, বিনীতভাবে বিদায় সম্ভাষণ জানানোর আগে প্রাপকের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং ইতিতে ভিক্ষুকের মতো বলা—আপনার স্নেহের কাঙ্গালিনী।
কাঙ্গালিনী না কচু। আমি কারো স্নেহ কিংবা আমিষ কিংবা শর্করার কাঙ্গালিনী নই।
এই মেয়েটি এসএমএস যুগের আগেকার। তাকে চিঠিই লিখতে হয়েছে। মেয়েটির চিঠি কাহিনি একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে আপনি যে উঠতে পারবেন না, এটা আন্দালিব রাশদী বেশ ভালো করেই জানেন।